বাগুইআটির দুই ছাত্রকে খুন ৫০ হাজারের জন্য! গলা টিপতে লোক এনেছিল 'জামাই'

বাগুইআটির দুই ছাত্রকে খুন ৫০ হাজারের জন্য! গলা টিপতে লোক এনেছিল 'জামাই'

৫০ হাজার টাকার জন্য দুটো ১৬ বছরের ছেলেকে খুন করে দিল? তাও আবার লোক ভাড়া করে? বাগুইআটিতে (Baguiati Students Murder) এখন এটাই আলোচনা। রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ সব দলা পাকিয়ে যাচ্ছে।

২২ অগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিল অতনু দে, অভিজিত্‍ নস্কর। মঙ্গলবার সকালে খবর মেলে বসিরহাট জেলা পুলিশের দুটি থানার মর্গে বেওয়ারিশ দুটো লাশ পড়ে রয়েছে।

তারপর সনাক্ত করে পরিবারের লোক।

মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী ওরফে জামাই এখনও অধরা। তবে চার জনকে গ্রেফতার (Arrest) করে পুলিশ (Bidhannagar Police) একটি ব্যাপারে নিশ্চিত তা হল, জামাই খুন করিয়েছে অতনু-অভিজিত্‍কে। তারা আবার মামাতো-পিসতুতো ভাই।

অতনুর বাড়ির লোক জানিয়েছেন, মোটরসাইকেল কেনার জন্য জামাইকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল। কিন্তু সেই গাড়ি আসছিল না। জামাই আবার অতনু, অভিজিতের বাড়ির লোকের ঘনিষ্ঠ। যাতায়াত ছিল বাড়িতে।

জানা যাচ্ছে, ২২ অগস্ট জামাই ফোন করে অতনুকে। বলে, বাইক কিনতে যাবে। অতনু ডেকে নেয় অভিজিত্‍কে। গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিল জামাই। তাতে আরও তিন জন ছিল। প্রথমে সেই চার চাকা গাড়িতে ওঠে অতনু এবং অভিজিত্‍। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় নিউটাউনের একটি বাইকের শোরুমে।

সেখানে মিনিট ১৫ থাকার পর ফের গাড়ি রওনা দেয় বাসন্তী হাইওয়ে ধরে। পুলিশ জানাচ্ছে, সেই সময়েই গাড়িতে থাকা বাকিরা গলা টিপে খুন করে অতনু ও অভিজিত্‍কে। প্রথমে অতনুর দেহ ফেলা হয় ন্যাজাটের একটা খালে। আরও কিছুটা এগিয়ে অভিজিতের দেহ ফেলে দেয় তারা।

পুলিশ জানিয়েছে, যেহেতু নিখোঁজ দুই ছাত্রের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসছিল তাই সন্তর্পণে তদন্ত করতে হচ্ছিল। যাতে ক্ষতি না হয়ে যায়। এরমধ্যেই অভিজিত্‍ বসু নামের একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ জানতে পারে, খুন করা হয়েছে বাগুইআটির দুই ছাত্রকে।

বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম শামিম আলি, সাহিল মোল্লা এবং দিব্যেন্দু দাস। এরপর পুলিশ সংলগ্ন এলাকায় বেওয়ারিশ লাশের ব্যাপারে খোঁজ নেয়। তখন বসিরহাট পুলিশের দুটি থানা জানায়—তাদের মর্গে এই বয়সী দুটি ছেলের দেহ রয়েছে। অতনুর দেহ মিলেছিল ২৩ অগস্ট, অভিজিতের ২৫ অগস্ট।

তবে এতদিন কেন দেহ পেতে সময় লাগল সেই প্রশ্নও উঠছে। পরিবারের অভিযোগ, প্রথম দিন পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেছিল। তাদের এও বক্তব্য, ওই রাতেই যদি পুলিশ গা করত তাহলে প্রাণে হয়তো দু'জনকে বাঁচানো যেত। যদিও পুলিশের দাবি, ২২ অগস্ট রাত ৯-১০টার মধ্যে এই খুনের ঘটনা ঘটেছিল।

এখন পুলিশের কাছে প্রথম চ্যালেঞ্জ সত্যেন্দ্রকে খুঁজে বের করা। তারপর জানা, সত্যিই কি ৫০ হাজার টাকার জন্যই খুন? নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে নেপথ্যে?