যুদ্ধ জিততে ভরসা নরখাদক-সিরিয়াল কিলাররা, কারাগারে-কারাগারে ঘুরছেন পুতিনের দূত

যুদ্ধ জিততে ভরসা নরখাদক-সিরিয়াল কিলাররা, কারাগারে-কারাগারে ঘুরছেন পুতিনের দূত

ইউক্রেনের প্রতিরোধে পিছু হঠছে রাশিয়া। বহু রুশ সেনা সদস্যই নিহত, আত্মসমর্পণ করছে অথবা পালাচ্ছে। এই অবস্থায় ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য 'সিরিয়াল কিলার'দের পাঠাচ্ছেন। এমনটাই দাবি করেছেন শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধ পর্যবেক্ষকরা। তাদের দলে অন্তত একজন নরখাদকও রয়েছে বলে তাঁদের দাবি।

ছয় মাস যুদ্ধক্ষেত্রে টিকতে পারলেই কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন তাঁরা, রুশ সরকারের পক্ষ থেকে এই ভয়ঙ্কর অপরাধীদের এমনই সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

‘রাশিয়া বিহাইন্ড বারস’ নামে এক সংস্থা, রুশ কারাগারে বন্দিদের সংখ্যার উপর নজরদারি করে। সংস্থার প্রধান ওলগা রোমানোভা জানিয়েছেন, এই রুশ কৌশল ইউক্রেনের পক্ষে “সবচেয়ে খারাপ দুঃস্বপ্ন”। পুতিনের বেসরকারি বাহিনীর সেনাপ্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন নিজেও একজন প্রাক্তন অপরাধী। রোমানোভার দাবি, অপরাধীদের নিয়োগ করার লক্ষ্যে সে নিজেই ব্যক্তিগতভাবে কারাগারে কারাগারে ঘুরছেন। ওলগা রোমানোভা বলেছেন, “পুতিনের পরিকল্পনা হল অন্তত ৫০,০০০ অপরাধীদের সেনা হিসেবে নিয়োগ করা। প্রিগোজিন, ইতিমধ্যেই ৩০০০-এরও বেশি বন্দীকে ইউক্রেনে পাঠিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছে, সিরিয়াল কিলার, ডাকাত এবং অন্তত একজন নরখাদক।”

আত্মসমর্পণকারী ইয়েভজেনি নুঝিন

‘রাশিয়া বিহাইন্ড বারস’ সংস্থার আইনজীবী রুসলান ভাখাপভ জানিয়েছেন, রাশিয়া প্রথমে মূলত হত্যাকারী, ডাকাতিতে অভিযুক্তদের নিয়োগ করছিল। কিন্তু, বর্তমানে নরখাদক-সহ সমস্ত অপরাধীদের নিয়োগ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত তাঁদের পরিচিত এক রুশ নরখাদককে সেনা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। কিয়েভের প্রকাশিত এক ফুটেজে ধরা পড়া রুশ সেনাদের মধ্যে তাকে চিনতে পেরেছিল ‘রাশিয়া বিহাইন্ড বারস’। এছাড়া তাঁদের পরিচিত এক সিরিয়াল কিলারকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বলে দাবি করেছেন ভাখাপভ। তবে, ইউক্রেনে লড়তে এসে তারা মশা-মাছির মতো মারা যাচ্ছে বলেও জানিয়েছে এই সংস্থা।

সম্প্রতি রাশিয়ার দোষী সাব্যস্ত এক খুনি ইউক্রেনে আত্মসমর্পণ করেছে। ৫৫ বছর বয়সী ওই হত্যাকারীর নাম ইয়েভজেনি নুঝিন। ১৯৯৯ সালে একটি হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রাশিয়ার এক কারাগারে বন্দি ছিল সে। কিন্তু, সম্প্রতি তাকে এক বেসরকারি সামরিক বাহিনীর হয়ে অন্তত ছয় মাস যুদ্ধ ক্ষেত্রে টিকে থাকার শর্তের বিনিময়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে এসে সে বুঝতে পারে, কামানের মুখে উড়ে যাওয়ার জন্য়ই তাকে ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে। কারণ, এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে তাদের প্রায় কোনও রকম যুদ্ধ প্রশিক্ষণ ছাড়াই পাঠানো হয়েছে। এই উপলব্ধি করার পরই সে আত্মসমর্পণ করে বলে জানিয়েছে ‘মেলঅনলাইন’।