৪০০ বছর আগেই নির্ধারিত চার্লসের নিয়তি সিংহাসন ছাড়তে হবে শিগগিরই রাজা হবেন রহস্যময় ব্যক্তি

৪০০ বছর আগেই নির্ধারিত চার্লসের নিয়তি সিংহাসন ছাড়তে হবে শিগগিরই রাজা হবেন রহস্যময় ব্যক্তি

ব্রিটিশ রাজ পরিবারে সবথেকে বেশিদিন রাজত্ব করার রেকর্ড করেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তাঁর প্রয়াণের পর, রাজা হয়েছেন তাঁর পুত্র রাজা চার্লস। তবে, ষোড়শ শতকের প্রখ্যাত ফরাসী ভবিষ্যত্‍দ্রষ্টা, নস্ট্রাদামুসের ভবিষ্যদ্বাণীগুলির এক নতুন ব্যাখ্যায় বেরিয়ে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য।

রাজা চার্লস-এর রাজত্বের মেয়াদ অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত হতে চলেছে। তার থেকেও অবাক করে দেওয়া তথ্য হল, তাঁর বদলে সিংহাসনে বসতে পারেন প্রিন্স হ্যারি! এমনকি, সিংহাসনের দাবিদার হতে পারেন অস্ট্রেলয়ার এক ব্যক্তিও। তাঁর দাবি, তিনি রাজা চার্লস এবং রানি কনসোর্ট ক্যামিলার গোপন ছেলে।

নস্ত্রাদামুস সোজা কথায় কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতেন না। সব কথাই তিনি বলে গিয়েছেন কবিতায়, গোপন ইঙ্গিতে, ইশারায়। নস্ত্রাদামুস গবেষক বিশেষজ্ঞদের একেকজন, একেক ভাবে সেই কবিতাগুলির ব্যাখ্যা করেন। শীর্ষস্থানীয় নস্ত্রাদামুস গবেষকদের একজন হলেন মারিও রিডিং। ২০০৫ সালে একটি বইতে তিনি নস্ট্রাদামুসের মূল ভবিষ্যদ্বাণীগুলির ব্যাখ্যা করেছিলেন। সেখানেই তিনি দাবি করেছেন, রাজকুমারী ডায়ানার থেকে তত্‍কালীন প্রিন্স চার্লসের বিবাহবিচ্ছেদই রাজা চার্লস-এর পতনের কারণ হবে। দেশের মানুষের ব্যাপক অস্বীকৃতির ফলে রাজা পদত্যাগ করতে বাধ্য হবেন। আর তারপর সিংহাসনে বসবেন এমন একজন ব্যক্তি, “যিনি কখনও রাজা হওয়ার আশা করেননি।”

মারিও রিডিং-এর ব্যাখ্যাকে কেন এত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? আসলে ইতিমধ্যেই তাঁর ব্যাখ্যা অনুযায়ী ব্রিটিশ রাজপরিবার সম্পর্কে বেশ কিছু ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে। ১৫৫৫ সালে নস্ত্রাদামুসের লেখা রহস্যময় কবিতাগুলি থেকে রিডিং রানি এলিজাবেথের মৃত্যুর বছরটি সঠিকভাবে বলে দিয়েছিলেন। তাঁর বইতে লেখা আছে, “সম্ভবত ২০২২ সালে, ৯৬ বছর বয়সে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু ঘটবে। তাঁর মায়ের জীবনকালে থেকে পাঁচ বছর কম বয়সে তাঁর প্রয়াণ ঘটবে।” রাজা চার্লস সম্পর্কেও তিনি এমনই কিছু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।

রিডিং জানিয়েছেন, নস্ট্রাডামাসের ভবিষ্যদ্বাণীমূলক কবিতাগুলির একটিতে রাজা তৃতীয় চার্লসকে “দ্বীপের রাজা” বলা হয়েছে। তাঁর মতে এর অর্থ হল চার্লসের রাজত্বের শুরুতেই, কমনওয়েলথের বেশিরভাগ অংশ ভেঙে যাবে। তাঁর রাজ্যের পরিধি শুধুমাত্র ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে। রিডিং-এর বই বলছে, “২০২২ সালে প্রিন্স চার্লস সিংহাসনে বসবেন। কিন্তু, ওয়েলসের রাজকুমারী ডায়ানার সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের পর, ব্রিটিশ জনগণের একটা বড় অংশের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল, তা এখনও রয়ে গিয়েছে।” এছাড়া, বয়সও রাজা চার্লসের সিংহাসনে বেশিদিন থাকার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।

ব্রিটিশ রাজ পরিবারের নিয়ম অনুযায়ী, চার্লসের পর তাঁর বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়ামের সিংহাসনে বসার কথা। কিন্তু, রিডিং-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী নস্ত্রাদামুস বলে গিয়েছিলেন, “এমন একজন ব্যক্তি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন, যিনি কখনও রাজা হওয়ার আশা করেননি।” প্রিন্স উইলিয়াম রাজা না হলে, তাঁর পরের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রিন্স হ্যারির রাজা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, গত বছরই সেই অধিকার ও রাজকীয় খেতাব পরিত্যাগ করেছেন তিনি। তাই রাজা হতে পারবেন না তিনি। এই কারণেই অনেকেই মনে করছেন, “রাজা হওয়ার আশা না করা” ব্যক্তিটি হলেন হ্যারি।

তবে, নস্ত্রাদামুসের ভবিষ্যদ্বাণীর এই ব্যাখ্যা সত্যি হলে, আরও বিস্ময়কর এক ব্যক্তি ব্রিটিশ সিংহাসনে বসতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা সাইমন ডোরান্ট-ডে মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, তিনি রাজা চার্লস এবং রানি কনসোর্টের ক্যামিলার গোপন পুত্র। রাজা চার্লসের উত্তরসূরি হিসেবে ব্রিটিশ সিংহাসনের দাবিদার হওয়াটা তাঁর পক্ষে অসম্ভব কিছু নয় বলেই মনে করছেন তিনি।

৫৬ বছর বয়সী এই ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন: “এটা চিন্তার খোরাক বটে। ভবিষ্যদ্বাণীতে স্পষ্ট বলা হয়েছে রাজ পরিবারের বাইরের কেউ রাজা চার্লসের স্থলাভিষিক্ত হবেন। এই কারণেই কিছু মানুষ মনে করছেন আমি এই বর্ণনার সঙ্গে মানানসই। আমি বিশ্বাস করি আমি চার্লস এবং ক্যামিলার ছেলে। আমি আদালতে এটা প্রমাণ করবই। আদালতের সময় পাওয়ার অপেক্ষায় আছি আমি। আমার যা বিশ্বাস, হয়তো নস্ট্রাদামুস সেটাই দেখেছিলেন। একদিন সব সত্য বেরিয়ে আসবে।”