লাদাখে শুরু হবে রঙিন জান্সকার উত্সব তারিখ জেনে ঘর বুক করুন এখনই
আকাশচুম্বী ধূসর পর্বত, খাঁড়া ঢাল, বরফে ঢাকা পর্বতের গাত্র, বরফের চাদরে ঢেকে যাওয়া নদী আর আর নীল হ্রদ! লাদাখ (Ladakh) যেন ভয়ঙ্কর সুন্দরের মিলনস্থল। রুক্ষ পাথরেরও যে এমন রূপ হতে পারে তা লাদাখ দর্শন বিনা বোঝা অসম্ভব। প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক লাদাখের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।
সারাবছর ধরে তাঁরা করেন চাষবাস। প্রস্তুতি নেন দীর্ঘ শীতের। কারণ শীতকালে বরফ জমে বন্ধ হয়ে যায় রাস্তা। পর্যটকের আড়াগোনাও স্তব্ধ হয়। তবু জীবন চলতে থাকে। এহেন লাদাখের পদমে পালিত হতে দু'দিনব্যাপী চলেছে জান্সকার উত্সবের সপ্তম সংস্করণ। জান্সকার উপত্যকার পদমে অনুষ্ঠিত হতে চলা উত্সবের দিনগুলি ধার্য হয়েছে যথাক্রমে ২৯ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর। 'আজাদি কা অমৃত মহোত্সব' বা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির অধীনে অনুষ্ঠিত হবে এবারের উত্সব। তাই অনুষ্ঠান যে আলাদা মাত্রা নেবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই উত্সব পালনের অন্যতম উদ্দেশ্য হল লাদাখের রঙিন ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে তুলে ধরা। একইসঙ্গে লাদাখের খাদ্য, পোশাক এবং শিল্পকেও তুলে ধরা হবে। এই উত্সব শুধু সামান্য উত্সব নয় বরং পাথুরে উপত্যকায় ফুটে ওঠা কোনও রঙিন গনগনে ফুল। নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করাই কঠিন যে বরফে পাথরে জন্ম নেওয়া মানুষের সংস্কৃতিও হতে পারে উচ্চ মানের! অতএব এতদিনেও যদি এই উত্সব চাক্ষুষ করার সৌভাগ্য না হয়ে থাকে তাহলে এখনই পরিকল্পনা করে ফেলুন ওই দু'টি দিনে লাদাখে পা রাখার। যা দেখবেন তা সারাজীবনের সঞ্চয় হয়ে থাকবে।
চলতি বছরের জান্সকার উত্সব অন্যবারের তুলনায় অনেকখানি আলাদা হতে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে। কার্গিল জেলার অংশ জান্সকারে পালিত হতে চলা এবারের উত্সবে থাকতে পারে ঘোড়া দৌড়, তীরন্দাজি, ইয়ক রাইড। অতএব জনজাতির ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি নিয়ে আগ্রহ থাকলে এই উত্সব হাতছাড়া করলে চলবে না।
পর্যটকরা এই উত্সব সম্পর্কে অল্পই জানেন। তবে অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের অনেকেই এই উত্সব সম্পর্কে খোঁজ রাখেন। অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের পরামর্শ, যাঁরা ফ্রোজেন রিভার ট্রেক করেন বা চাদর ট্রেক করেন তাঁদের উচিত আর একটু কষ্ট করে পদম-দরচা, লুংনাক এবং জান্সকার-শাম ভ্যালি ট্রেক করা। পদম শহরটির নাম হয়েছে বৌদ্ধ তিব্বতি গুরু পদ্মসম্ভবা থেকে। জান্সকারের একমাত্র প্রশাসনিক শহর হল পদম।
কীভাবে হয় অনুষ্ঠান?
চাষবাস, স্কুল, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন ও দীর্ঘ শীতের প্রস্তুতি নেওয়ার পর স্থানীয়রা এই দু'দিনের মনেস্ট্রিকেন্দ্রিক উত্সবে প্রাণ ঢেলে দেন। উত্সবে রঙিন পরা হয় রঙিন পোশাক। গাওয়া হয় গান। উত্সবকে কেন্দ্র করে সামাজিকভাবে কাছাকাছি আসেন স্থানীয়রা। পরনে থাকে উজ্জ্বল বর্ণের পোশাক ও নানারূপ মুখোশ।
কেন পালিত হয়?
অশুভের বিরুদ্ধে শুভ বা দুষ্টের বিরুদ্ধে ভালোর জয়কে প্রতিফলিত করতেই পালন করা হয় অনুষ্ঠান।