পুকুর খনন বনসৃজনের টাকা উপপ্রধানের পকেটে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ঝাড়গ্রামে

পুকুর খনন বনসৃজনের টাকা উপপ্রধানের পকেটে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ঝাড়গ্রামে

 শিক্ষক নিয়োগ থেকে গরু-কয়লা পাচার, দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ শাসকদলের নেতারা। তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছেই। কিন্তু ঝাড়গ্রামে (Jhargram News) ১০০ দিনের কাজে লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। গ্রামবাসীরা মিলেই দুর্নীতির পর্দাফাঁস করলেন।

অভিযোগ, পুকুর খনন থেকে কাজুবাদামের বাগান করার নামে সরকারের বরাদ্দ টাকা তোলা হলেও, পুকুর এবং কাজুবাগাম বাগানের অস্তিত্বই নেই (MGNREGA Corruption)।

ঝাড়গ্রামে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ

আমডিহা পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে থাকলেও একুশের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন উপপ্রধান। তাঁর বিরুদ্ধেই লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক।

ঝাড়গ্রামের মানিকপাড় পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আমডিহা জিপি-র ঘটনা। সেখানে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহশিস মাহাতো। তাঁর দাদা, পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক শুভাশিস মাহাতোর জমিতে, ১০০ দিনের প্রকল্পে পুকুর খনন দেখানো হয়েছে। শুভাশিসের আরেকটি জমিতে দেখানো হয়েছে বনসৃজন এবং কাজুগাছ লাগানোর।

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, সরকারি বরাদ্দের চাকা নিয়ে সম্প্রতি তথ্য জানার আইনে আবেদন জানান তাঁরা (RTI)। তাতে যে জবাব আসে, সেই অনুযায়ী, ২ লক্ষ ৬৯ হাজার ৫৩৭ টাকা বরাদ্দের কথা দেখানো হয়। আমডিহা গ্রামে ৫৬৮ খতিয়ান নম্বরে শুভাশিস যে ১৮১ নম্বর প্লটের মালিক, তাতেই ৩০×৪০ মডেলের কাজুবাদাম হওয়ার উল্লেখ রয়েছে। তাঁরই নামে পুকুর খননের কথাও উল্লেখ রয়েছে আরটিআই নথিতে। সেই নথি দেখিয়ে বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। অথচ পুকুর, বাগান, কোনওটিরই অস্তিত্ব নেই বলে অভিযোগ।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দাদার জমি দেখিয়ে গোটা টাকা আত্মসাত্‍ করেছেন উপপ্রধান। লোক দেখানো কয়েক দিন কাজ হলেও, তার পর আর কিছু এগোয়নি। লাগানো হয়নি কোনও কাজু গাছ। অন্য কিছু গাছ লাগানো হলেও, বর্তমানে তার কোনও অস্তিত্ব নেই। অথচ জমির উপর ভেঙে পড়ে থাকা বোর্ডে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, '(৩২১০০০৫০০৭/৩২১০০২০৪০৮৮৮৫৩৬) কাজু প্লানটেশন উইথ ৩০×৪০ মডেল অফ শুভাশিস মাহাত অ্যাট আমডিহা'।

আরটিআই করে জানতে পারলেন গ্রামবাসীরা

কাজু গাছ যে লাগানো হয়নি, সে কথা মেনে নিয়েছেমন শুভাশিস। তার বদলে অন্য গাছ বসানো হয়েছি বলে জানান তিনি, যার একটিরও অস্তিত্ব চোখে পড়েনি। কাজ না করে টাকা তোলা নিয়ে প্রশ্ন করলে জানান, তিনি কিছু জানেন না এ ব্যাপারে। সই করতে বলা হয়েছিল, করে দিয়েছিলেন মাত্র। তাঁর নামে কোনও পুকুরও নেই বলে জানান শুভাশিস।

এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে উপপ্রধান বলেন, "দেখুন বর্ষার কারণে কোথাও কোথাও যদি নাও হতে পারে... কিন্তু সব জায়গায় কাজ হয়েছে, এবং কাজের সাথে যুক্ত...।" কিন্তু তাঁর দাদাই তো বলছেন কাজ হয়নি! জবাবে মহশিস বলেন, "এটা টেকনিক্যাল বিষয়। অনেক লোক জড়িত থাকে।"