ইস্টবেঙ্গলের পাসি হলেন মোহনবাগানের 'মেসি'! বাইপাস জুড়ে আওয়াজ সবুজ মেরুন সমর্থকদের

ইস্টবেঙ্গলের পাসি হলেন মোহনবাগানের 'মেসি'! বাইপাস জুড়ে আওয়াজ সবুজ মেরুন সমর্থকদের

বিবাসরীয় ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে আত্মঘাতী গোল করে ভিলেন সুমিত পাসি। কিন্তু খেলা শেষে তিনিই মোহনবাগান সমর্থকদের (Mohun Bagan Fans) কাছে যেন 'লিওনেল মেসি'। পাসি শুধু লাল হলুদ সমর্থকদের হৃদয় ভেঙে দেননি, তিনি হয়ে উঠেছেন মোহন জনতার বন্ধুও।

তাই যুবভারতী ফেরত সবুজ মেরুন সমর্থকরা রাতের বাইপাসে আওয়াজ তুললেন, 'পাসি আমাদের লিও মেসি'।

পাশাপাশি মোহন গ্যালারির দিল জিতেছেন পল পোগবার দাদা ফ্লোরেন্তিনও। তিনি রক্ষণে চিনের প্রাচীর হয়ে উঠেছিলেন।

রবিবার খেলায় টিকিটের চাহিদা ছিল গগণচুম্বি। শেষ দু'দিনে সেই চাহিদা ফিরিয়ে দিয়েছিল আশির দশককে। দুই প্রধানের তাঁবুর বাইরে ছিল টিকিটের হাহাকার! অনেকে টিকিট পেয়েছেন, অনেকে পাননি। কিন্তু উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। যাঁরা এদিন যুবভারতীতে টিকিট পেলেন তাঁরা সত্যিই ভাগ্যবান।

করোনার কারণে প্রায় তিনবছর এই আবেগের ম্যাচই হয়নি। সেই কারণে এই খেলা দেখার জন্য আট থেকে আশির উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। পাড়ার রক থেকে চায়ের ঠেকে আলোচনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তরুণী কলেজ পড়ুয়াও একটা টিকিটের জন্য লাইন দিয়েছিলেন ময়দানে। তাড়া খেয়েছেন ঘোড়সওয়ার পুলিশেরও।

শুরু থেকে শেষ অবধি ছোট থেকে বড় সকলের গলায় নিজের পছন্দের দলের প্রতি গলা ফাটানো। বাইপাস যেন আজ দুই দলের পতাকায় ঢেকে গিয়েছিল। কোথাও লাল হলুদ কোথাও আবার সবুজ মেরুন। এই চার রঙ যেন দাপিয়ে বেরিয়েছে গোটা রাস্তা।

যুবভারতীতে মিশে গিয়েছে আনন্দের জোয়ারে। বাস, অটো, ট্যাক্সি, বাইক রাস্তায় যেন শুধুই খেলার আমেজ। মাঠে পৌঁছানো পর্যন্ত ছিল যেন উন্মাদনার জোয়ার।

মাঠে ছিল অন্য উন্মাদনা। যেমন ইস্টবেঙ্গলের গ্যালারিতে, তেমন মোহনবাগানেরও। সব গ্যালারি থেকে সমর্থকেরা শেষ বিন্দু পর্যন্ত নিজেদের মজা অনুভব করে নিতে চেয়েছেন। একেই বলে হয়তো ডার্বি, একেই বলে হয়তো আবেগ।

মাঠে আসা আশির এক বৃদ্ধের কথায়, ''ডার্বি নিয়ে এমন উন্মাদনা দেখেছি আশির দশকে। এবারে টিকিট নিতে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত মাঠে আসতে পেরে খুব খুশি। পরের ডার্বিতে আর আসতে পারব কিনা জানি না। তাই এই ম্যাচটা দারুণ উপভোগ করলাম।''

তেমনই বছর ১৫-র তন্ময়ের গলাতেও শোনা গেল প্রথম ডার্বি দেখতে আসার আনন্দের সুর। তার কথায়, ''বাবার সঙ্গে প্রথম মাঠে এলাম। এত উত্তেজনা কোনওদিন দেখিনি। পরের ডার্বিতেও আসব।''

ঝালমুড়ি বিক্রেতা থেকে পতাকা বিক্রেতা সবার মুখেই যেন একটা সুর, বারেবারে হোক ডার্বি। ব্যবসা হোক বা উন্মাদনা আজ ফুটবলপ্রেমীরা মেতেছিলেন উত্‍সবে। আর সবুজ মেরুন আবেগের বিস্ফোরণে সেই চিরপরিচিত আওয়াজও বাতাসে ভাসছিল, 'যতবার ডার্বি, ততবার হারবি'।