প্রাক্তন TMC বিধায়ক দীপক ঘোষের বই তুলে ধরে প্রচারের হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর ৫৬ -৯১-১০২ নম্বর পাতায় ঠিক কী রয়েছে

প্রাক্তন TMC বিধায়ক দীপক ঘোষের বই তুলে ধরে প্রচারের হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর ৫৬ -৯১-১০২ নম্বর পাতায় ঠিক কী রয়েছে

বিজেপির নবান্ন অভিযানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ডোন্ট টাচ মন্তব্য নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন ডায়মন্ড বারবারের তৃণমূল সাংসদ তথা ঘাসফুল শিবিরের সেকেন্ড ইন কমান্ড। বিজেপির তরফ থেকে এই আক্রমণকে বিলো দ্য বেল্ট আক্রমণ বলা হয়েছিল। একই মন্তব্য করে পাল্টা আক্রমণে গেলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ।

তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক দীপক ঘোষের প্রকাশিত বই তুলে ধরে পাল্টা প্রচারের হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে লেখা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) যেমন দেখেছি বইয়ের তিনটি পাতার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর হুঁশিয়ারি নিয়ে তৃণমূল কিংবা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


জন্মের ভুয়ো সার্টিফিকেট (৫৬ নম্বর পাতায়)

১৯৮৪ সালে নির্বাচনে জয়ে বয়স নিয়ে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ রয়েছে। ২০১২ সালে সেই খবর একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। প্রসঙ্গত ১৯৮৪ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার সংসদে যান যাদবপুর কেন্দ্র থেকে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে। সংবাদ মাধ্যমের সেই রিপোর্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'My Unforgetable Memories' বইয়ে তাঁর জন্য তাঁর বাবার তৈরি করা ভুয়ো জন্ম সার্টিফিকেটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করতেই তা করা হয়েছিল বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই উল্লেখ করেছিলেন বলে বলা হয়েছে সেই রিপোর্টে। তাঁর বাবা বয়স ৫ বছর বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বই অনুযায়ী ধরলে তাঁর জন্ম তারিখ ১৯৬০-এর ৫ অক্টোবর। আর লোকসভার ওয়েবসাইট অনুসারে তাঁর বয়স ১৯৫৫-র ৫ অক্টোবর।

অনশনে মাংসের স্যান্ডউইচ আর চকোলেট (৯১ নম্বর পাতায়)

২০০৬-এ টানা ২৬ দিনের অনশন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৬-এর ৪ ডিসেম্বর সেই অনশন শুরু হয়। উদ্দেশ্য ছিল সিঙ্গুরে টাটাদের প্রস্তাবিত গাড়ি কারখানার জন্য যে শালের খুঁটি বসানো হয়েছিল, তা উপড়ে ফেলতে বাধ্য করা। দীপক ঘোষ তাঁর বইয়ের ৯১ নম্বর পাতায় লিখেছেন, ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলের পশ্চিম দিকের ফুটপাতে চৌকি বসিয়ে মঞ্চ তৈরির পাশাপাশি সেখানে অস্থায়ী শৌচাগারের বন্দোবস্তও করা হয়। মঞ্চের ওপরে প্রতিদিন রাত ৯ টা থেকে পরদিন সকাল ১০ টা পর্যন্ত পর্দা খাটানো থাকত। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, সেখানে বর্ণালী মুখোপাধ্যা একমাত্র ব্যক্তি যিনি সত্যিই অনশন করেছিলেন। ১৮ দিন পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। দীপক ঘোষ তাঁর বাইয়ে অভিযোগ করেছেন, মঞ্তে পর্দা খাটানোর পরেই রাতে চিকেন স্যান্ডউইচ আর দিনে চকোলেট খেতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা ২৫ দিনের অনশন শেষে তাঁর ওজন একটুও কমেনি।

ভাইয়ের স্ত্রী ঝাঁসির আত্মহত্যা (১০২ নম্বর পাতায় আরটিআই-এর প্রমাণ)

দীপক ঘোষ বাইয়ে লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় ভাই অসীম ওরফে কালী বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী ঝাঁসি বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৪ সালে ২৪/২৫ অক্টোবার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার কারণ জানতে চেয়ে তিনি কলকাতা পুলিশের কাছে আরটিআইও করেছিলেন। কিন্তু কলকাতা পুলিশের তরফে তথ্য প্রকাশে অস্বীকার করা হয়।
দীপক ঘোষ দাবি করেছেন, বাম আমলে সেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ময়নাতদন্তও করা হয়নি। এব্যাপারে যাতে ময়নাতদন্ত না হয়, তার জন্য তত্‍কালীন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায় কথা বলেছিলেন জ্যোতি বসুর সঙ্গে আর সৌগত রায় কথা বলেছিলেন তত্‍কালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রথমে রাজি না হলেও, পরে জ্যোতি বসু বলায় রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। সেদিন ময়নাতদন্ত করা হলে পরিবারের কেচ্ছা প্রকাশ হয়ে পড়ত বলে উল্লেখ করেছেন দীপক ঘোষ।

অভিষেকের কাকা-কাকিমাও আসতেন তাঁর কাছে

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ বাড়ির মহিলাদের দিয়ে টাকা পাচার করান। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আছে তাঁর (অভিষেকের) কাকা-কাকিমা এসে পরিবার সম্পর্কে অনেক অভিযোগ করতেন। সেইসব প্রকাশ করলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘর থেকে বেরোতে পারবেন কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী।