সঙ্কটের আবহে দেশের অর্থনীতি, বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে টান, অশনি সংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

সঙ্কটের আবহে দেশের অর্থনীতি, বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে টান, অশনি সংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

দেশের অর্থনীতিতে এখন সংকট চলছে। দিন যত যাচ্ছে, সংকট ততো ঘনীভুত হচ্ছে। এই সংকট সাধারণ মানুষের জীবনে নিয়ে এসেছে দুর্ভোগ। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে একদিকে, অন্যদিকে কমে যাচ্ছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। ওদিকে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠা দূরে থাক, পুরোনোগুলোই টিকে থাকতে পারছে না।

ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ীরাই ভালো আছেন শুধু, বাকিদের অবস্থা খারাপ।

এর মধ্যেই অর্থনীতিবিদদের আরও আশঙ্কিত করে দেশে কমেছে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার। তথ্য অনুযায়ী, ২ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে ৭৯৪.১ কোটি ডলার কমে তা হয়েছে ৫৫,৩১০.৫ কোটি ডলার। যা ২০২০-এর ৯ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন। জানা গিয়েছে, ডলারের নিরিখে টাকা যাতে শক্তি না হারায় তা নিশ্চিত করতে আমেরিকার মুদ্রা বিক্রি করে চলেছে শীর্ষ ব্যাংক। যা ভাণ্ডার কমার অন্যতম কারণ।

উদ্বেগের বিষয় হল এই যে, ভারতের মতো দেশে মোট প্রয়োজনের বেশিরভাগ পেট্রোপণ‌্যই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বিদেশি মুদ্রার মজুত কমলে তেল আমদানিতে ঘাটতি হতে পারে। দেশের এই অবস্থায় জন্য দায়ী কারণগুলো চিহ্নিত করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, মোটা দাগে তিন কারণে সৃষ্টি হয়েছে অর্থনীতির এই সংকট।

প্রথমটি হলো, দীর্ঘদিন থেকে রাষ্ট্রীয় খাতগুলোর সংস্কার হয়নি। দ্বিতীয় কারণ, করোনার অভিঘাতে অর্থনীতির চাকা ঠিকমতো ঘুরতে পারেনি, অধিকন্তু জনজীবন হয়ে পড়েছিল বিপর্যস্ত। তৃতীয়ত, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলসহ দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ তো গেল মোটা দাগের তিন কারণ। কোনও দেশের অর্থনীতি বর্তমানে কতটা শক্তিশালী, তা নির্ণয় করতে গেলে একটি বড় মানক হল বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার।সঙ্কটের আবহে দেশের অর্থনীতি, বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে টান, অশনি সংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

যে দেশের বিদেশি অর্থভাণ্ডার যত শক্তিশালী, তাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও বর্তমানে ততটাই উন্নত। কি ভাবে এই নিম্নমুখী অর্থনীতির গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হবে? বিশেষজ্ঞরা এই নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, যেমন, ব্যাংকিং চ্যানেলে বা এলসির মাধ্যমে টাকা পাচার বন্ধ করতে হবে। ইতোমধ্যে এটি শুরু হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হুন্ডি বন্ধ করতে হবে।

সঙ্কটের আবহে দেশের অর্থনীতি, বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে টান, অশনি সংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কমাতে হবে ও তা সহজ করতে হবে। তৃতীয়ত, বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। চতুর্থত, কৃষিতে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেশের ভেতরে খাদ্য উত্‍পাদন বাড়াতে হবে। যদিও সরকারের পক্ষথেকে দেশের এই অবস্থা নিয়ে সেভাবে কিছু বলাহয়নি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যদি এই অবস্থা চলতে থাকে তা হলে দেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হবে।