'বাবা তো এই ছিল কোথায় গেল?' বাচ্চাদুটোর কথা শুনেই বাকিটা বুঝে যান তদন্তকারীরা

'বাবা তো এই ছিল কোথায় গেল?' বাচ্চাদুটোর কথা শুনেই বাকিটা বুঝে যান তদন্তকারীরা

কাঁটা তারের পাশ দিয়েই বাচ্চা দুটো ইতঃস্তত ঘোরাফেরা করছিল। দু'জনের মধ্যে একজনের বয়স বড়জোড় সাত, আরেকজনের পাঁচ হবে। সঙ্গে বড়রা কেউই ছিলেন না। দুটো বাচ্চাকে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল সীমান্তরক্ষীদের। তাঁরা প্রশ্ন করতেই বাচ্চাগুলো বলেছিল, 'বাবা তো ছিল এখানে,কোথায় গেল, সেটা বুঝতে পারছি না… ' বিষয়টা বুঝে গিয়েছিলেন দুঁদে কর্তারা।

খোঁজ চালান। ঝোপের মধ্যে থেকেই খুঁজে বার করেন বাচ্চাদুটোর বাবাকে। চেপে ধরতেই পর্দাফাঁস। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিজের সন্তানদের বিক্রি করতে এসে শ্রীঘরে ঠাঁই হল বাবার। বসিরহাটের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গাবর্ডাহ্ এলাকার ঘটনা।

জানা গিয়েছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর স্বরূপনগর সীমান্তের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ১১২ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা টহলদারির সময় দুই শিশুকে অবচেতন মনে ইতঃস্তত ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। দেখে জওয়ানদের সন্দেহ হলে, তাঁরা সেই দুই শিশুকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে স্বরূপনগর থানার পুলিশের কাছে খবর দেয়।

স্বরূপনগর থানার পুলিশ আধিকারিক প্রতাপ মোদকের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে ওই দুটি শিশুকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, তারা সেখানে বাবার সঙ্গেই এসেছিল। তাদেরকে জেরায় পুলিশের হাতে উঠে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পুলিশ জানতে পারে, ওই দুই শিশুর বাবা নাজিম কলু মোটা টাকায় সেই দুই শিশুকে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে সীমান্তে ঘোরাঘুরি করছিল। দূর থেকে জওয়ানদের দেখতে পেয়ে শিশু দুটি হাতছাড়া করে দূরে ঝোপে লুকিয়ে পড়ে।

গোপন আস্তানা থেকে নাজিম কলুকে গ্রেফতার করা হয়। নাজিমের সঙ্গে আন্তর্জাতিক শিশু পাচার চক্রের কোনও যোগাযোগ আছে কিনা তদন্ত শুরু করেছে স্বরূপনগর থানার পুলিশ। ইতিমধ্যে ওই দুই শিশুকে সল্টলেকে হোমে পাঠানো হয়েছে।