হার্দিক হারিকেনেও হার শামি ছাড়া সমস্যা বাড়বেই

হার্দিক হারিকেনেও হার শামি ছাড়া সমস্যা বাড়বেই

হার্দিকের ৩০ বলে অপরাজিত ৭১ রান কাজে এল না।

জাতীয় নির্বাচকদের এবং ভারতের দল পরিচালন সমিতির কাছে একটাই প্রশ্ন। মহম্মদ শামিকে কি এর পরেও ভাবা হবে না?

জানি, কোভিড হওয়ায় শামি অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়টা খেলতে পারছে না। কিন্তু তার আগে বিশ্বকাপের দলেই তো রাখা হয়নি ওকে।

স্ট্যান্ড-বাই করে দেওয়া হল। যশপ্রীত বুমরা এবং শামি হল বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পেস বোলিং জুটি। সেটা লাল বলেই হোক কী সাদা বলে। সেই জুটিটাই ভেঙে দিলেন নির্বাচকেরা।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি রান করেছিল ভারত। দু'শো রান তাড়া করে অস্ট্রেলিয়া কোনও দিন ভারতকে হারায়নি। এ দিন মোহালিতে যেটা করে দেখাল অ্যারন ফিঞ্চের দল। বুঝিয়ে দিল, কেন ওরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ওদের প্রথম একাদশের চার ক্রিকেটার নেই। তা সত্ত্বেও ২০৯ রানের লক্ষ্য চার বল বাকি থাকতে ছয় উইকেট হারিয়ে তুলে দিল।

ভারত হারল বোলারদের ব্যর্থতায়। বুমরা বিশ্রাম নিচ্ছে। শামি নেই। ফলে নতুন বলেও চাপ তৈরি করতে পারল না ভারত, ডেথ ওভারেও নয়। প্রথম ছ'ওভারে ক্যামেরন গ্রিনের (৩০ বলে ৬১) বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সামনে অসহায় দেখিয়েছে ভারতীয় পেসারদের। ছ'ওভারে অস্ট্রেলিয়া করে ৬০। এর পরে শেষ পাঁচ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ৬১। ক্রিজ়ে ছিল টিম ডেভিড (১৪ বলে ১৮) এবং ম্যাথু ওয়েড (২১ বলে অপরাজিত ৪৫)। সেখান থেকে জিতে গেল ওরা।

ডেথ ওভারের বিশেষজ্ঞ বলে পরিচিত হর্ষল পটেল ১৮তম ওভারে ২২ রান দিল। ১৭ এবং ১৯ নম্বরে এসে ভুবনেশ্বর কুমার দিয়ে গেল ১৫ এবং ১৬। তার চেয়েও বড় কথা, ভারতীয় পেসারদের দেখে মনে হয়নি, ওরা চাপ তৈরি করতে পারে। সেই এশিয়া কাপ থেকে সমস্যাটা চলছে। গত চার-পাঁচ বছরে ভুবনেশ্বরের সেই সাফল্যটা নেই। বিশেষ করে শেষ দিকে তো ভীষণই মার খাচ্ছে। তা হলে শামি কেন বাইরে? যে আন্তর্জাতিক এবং আইপিএল— দু'ধরনের ক্রিকেটেই সফল। বয়সের কথা তুললে বলব চল্লিশের কাছাকাছি দীনেশ কার্তিক কী করে দলে আছে? কার্তিকের সাফল্য বলতে তো সেই আইপিএল! তা হলে শামি বাইরে থাকে কোন যুক্তিতে? শামি নতুন বলেও যেমন, পুরনো বলেও সমান কার্যকর। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে এ দিন সেরা ছিল অক্ষর পটেল (৩-১৭)। তবে ফিল্ডাররা তিনটে ক্যাচ ছেড়ে কাজটা আরও কঠিন করে দেয়।

সিরিজ়ের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারত দু'শো পেরিয়ে গেল হার্দিক পাণ্ড্যের দাপটে। আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করানোর পর থেকেই বদলে গিয়েছে হার্দিক। চোট পাওয়ার আগে যে হার্দিককে দেখেছিলাম, তাকেই ফিরে পাওয়া যাচ্ছে। খেলার পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজের ব্যাটিংকে বদলে নিচ্ছে। আইপিএলে দেখেছিলাম, নিজেকে তিন নম্বরে তুলে এনে ইনিংস গড়ার কাজটা করছিল। ভারতীয় দলে ওর ভূমিকাটা অন্য রকম। পাঁচ নম্বরে নামা মানে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে হবে। আবার ম্যাচটা শেষ করেও আসতে হবে।

এ দিন দু'টো ভূমিকাতেই অনবদ্য ছিল হার্দিক। শুরুটা আগ্রাসী ভঙ্গিতে করল। আর শেষটা ঝড় তুলে। শেষ ওভারে ক্যামেরন গ্রিনকে বল করতে দিয়ে ভুল করেছিল অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। শেষ তিনটে বলে তিনটে ছয় মেরে ভারতকে দু'শো রানের উপরে নিয়ে যায় হার্দিক। শেষ পর্যন্ত হার্দিক করে গেল ৩০ বলে অপরাজিত ৭১। মারল সাতটি চার, পাঁচটি ছয়।

মোহালিতে ভারতের সেরা দুই ব্যাটসম্যান অবশ্য রান পেল না। রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। রোহিত সম্পর্কে বলব, ও ক্রিজ়ে একটু বেশি নড়াচড়া করছে। যার ফলে কাট শটটা এখন বেশি মারতে পারছে না। রোহিতের স্কোরিং শটটা হয়ে দাঁড়িয়েছে মূলত পুল। তবে কে এল রাহুল এবং সূর্যকুমার যাদবের ব্যাটিং ভারতকে নির্ভরতা দিয়েছে।

কিন্তু বোলিং রোগ দ্রুত ঠিক করতে না পারলে আসন্ন বিশ্বকাপে বড় সমস্যায় পড়বে ভারত।