'মল' ভেবে ফেলে দিচ্ছিলেন আলমারি থেকে উদ্ধার হওয়া কালো শক্ত জিনিসটা পরে সেটি বিক্রি করেই হয়ে গেলেন মালামাল

'মল' ভেবে ফেলে দিচ্ছিলেন আলমারি থেকে উদ্ধার হওয়া কালো শক্ত জিনিসটা পরে সেটি বিক্রি করেই হয়ে গেলেন মালামাল

 লাখো টাকার দামি খাদ্যপণ্যের কথা ভাবলেই মাথায় আসে বহু বছরের পুরনো ওয়াইন বা হুইস্কি। কিন্তু একটা ছোট চকোলেটের দাম কতই বা আর হতে পারে? অত্যন্ত দামি চকোলেট হলে, তার দাম সর্বাধিক কয়েক হাজার টাকা হতে পারে। কিন্তু এক টুকরো চকোলেট বিকোচ্ছে ৪৫ হাজার টাকারও বেশি দামে।

শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্যি। কেন এত দাম এক টুকরো চকোলেটের, তা নিয়ে প্রশ্ন।

বাকি খাদ্যসামগ্রীর মতো চকোলেটেরও একটি নির্দিষ্ট জীবনকালের মেয়াদ বা এক্সপায়েরি ডেট থাকে। সাধারণত তিন বছর অবধি চকোলেট সম্পূর্ণ ঠিক থাকে। কিন্তু ৫০০ পাউন্ড বা ৪৫ হাজারে যে চকোলেট বিক্রি হচ্ছে, তার বয়স ১২৩ বছর। রানি ভিক্টোরিয়ার যুগের এই চকোলেট এত বছর পরও নষ্ট হয়নি। অটুট রয়েছে তার স্বাদও।

সম্প্রতিই ব্রিটেনের লিঙ্কনশিয়রে একটি বাড়ির আলমারি থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি টিনের বাক্স। ওই বাক্সের ভিতরেই ছিল ১৮৯৯ সালে তৈরি ওই চকোলেট। একটি নয়, একাধিক চকোলেট ছিল ওই বাক্সের ভিতরে। যার বাড়ি থেকে ওই চকোলেটগুলি উদ্ধার হয়েছে, তিনি প্রথমে বুঝতেও পারেননি এটি যে চকোলেট। কালো রঙের শক্ত ব্লকগুলিকে তিনি প্রথমে ইদুর বা অন্য কোনও প্রাণীর মল বলে মনে করা হলেও, পরে গন্ধ শুঁকে তিনি বুঝতে পারেন যে, ওগুলি আসলে চকোলেট।

চকোলেটের মো়ড়ক দেখেই আন্দাজ করেছিলেন যে বহু পুরনো হবে ওই চকোলেটগুলি। কিন্তু কত বছরের পুরনো, তা জানতে পারেন গুগল সার্চ করার পরই। ছবি দিয়ে সার্চ করতেই জানতে পারেন, রানি ভিক্টোরিয়ার আমলে তৈরি হত এই চকোলেটগুলি। উদ্ধার হওয়া চকোলেটগুলি ১৮৯৯ সালে তৈরি হয়েছিল, বর্তমানে তার বয়স ১২৩ বছর। এত বছরের পুরনো চকোলেট উদ্ধার হওয়ার পরই ওই ব্যক্তি স্থির করেন, নিলামে বিক্রি করবেন ওই চকোলেটগুলি। ভেবেছিলেন, চকোলেট বিক্রি করে সর্বাধিক ১০০ থেকে ২০০ পাউন্ড উপার্জন করবেন। কিন্তু নিলাম শুরু হতেই চড়চড়িয়ে বাড়তে থাকে দাম, শেষ অবধি এক ব্যক্তি ৪৪০ পাউন্ডে কিনে নেন ওই চকোলেটের টুকরোটি। নিলামের ফি মিলিয়ে মোট ৫১৯ পাউন্ড খরচ করেছেন ওই ব্যক্তি, ভারতীয় মূল্যে যার দাম ৪৫ হাজারেরও বেশি।

জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র বহু বছর পুরনো হওয়ার কারণেই এই চকোলেট এত দামে বিক্রি হয়নি, এর পিছনে লুকিয়ে থাকা ইতিহাসের কারণেই এর এত চড়া দাম। জানা গিয়েছে, যুদ্ধের সময় রানি ভিক্টোরিয়া ব্রিটিশ সেনাদের মনোবল বাড়াতেই এই চকোলেট পাঠিয়েছিলেন। তবে চকোলেট প্রস্তুতকারক সংস্থা কুইকার্স সেই সময়ে যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল এবং যুদ্ধের সময়ে তারা ব্যবসা করে লাভ করতে চাননি বলেই, বিনা ব্রান্ডের নামেই টিনের বাক্সে ওই চকোলেটগুলি বিক্রি করত। রানির নির্দেশেই অত্যন্ত উচ্চ গুণমানের চকোলেট তৈরি করা হয়েছিল। কোনও ব্রান্ডের নাম উল্লেখ না থাকলেও, টিনের বাক্সের উপরে রানি ভিক্টোরিয়ার ছবি লাগানো ছিল। ছোট্ট হরফে লেখা ছিল ‘দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯০০’।