বার্ষিক রিপোর্টে গৌতম আদানির তোপের মুখে হিন্ডেনবার্গ

বার্ষিক রিপোর্টে  গৌতম আদানির তোপের মুখে হিন্ডেনবার্গ

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ নিয়ে সরাসরি মুখ খুললেন আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি। শেয়ারহোল্ডারদের পাঠানো বার্ষিক বার্তায় দাবি করলেন, তাঁর সংস্থা পরিচালনা এবং অন্যান্য নিয়ম মানার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটিও আদানি গোষ্ঠীতে কোনও অনিয়ম খুঁজে পায়নি। সেই সঙ্গে হিন্ডেবার্গকে এক হাত নিয়ে তাঁর তোপ, প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল তথ্য দিয়ে সংস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে তারা।

এই ভাবে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দাম কমিয়ে তা থেকে মুনাফা লুটেছে আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থাটি। তবে আমেরিকায় তাদের লগ্নিকারীদের ডেকে পাঠানোর কোনও খবর গোষ্ঠীর কাছে নেই বলেও গৌতমের দাবি।

গত ২৪ জানুয়ারি আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিজেদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার দরে কারচুপি করে দাম বাড়ানোর অভিযোগ এনেছিল হিন্ডেনবার্গ। রিপোর্টে তাদের দাবি, ঘাড়ে ঋণের বোঝা চাপলেও, প্রায় এক দশক ধরে এ ভাবে বিপুল মুনাফা লুটেছে গৌতম আদানির সংস্থাটি। করের স্বর্গরাজ্যে টাকা রেখে তা ফাঁকিও দিয়েছে। বিদেশ থেকে ঘুরপথে টাকা এসেছে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থায়। এ ক্ষেত্রে উঠে এসেছিল গৌতম আদানির দাদা বিনোদের নাম। এর পরেই বিপুল পতন হয় আদানি গোষ্ঠীর নথিভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দরে। গৌতম আদানি নিজেও ধনী ব্যক্তির তালিকায় পিছিয়ে যান অনেকটা।

এই অভিযোগ অবশ্য বারবারই খারিজ করেছে আদানিরা। তাদের পাল্টা দাবি ছিল, গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ 'ভারত, দেশের প্রতিষ্ঠান এবং আর্থিক বৃদ্ধির উপরে আক্রমণ'। পাশাপাশি, সেবি শীর্ষ আদালতে যে আর্জি জমা দিয়েছে, তাতে বেআইনি কার্যকলাপ নিয়ে চূড়ান্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। শুধু রিপোর্টে যে সমস্ত অভিযোগের কথা বলা হয়েছে, তা-ই তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছিল আদানিরা।

এ বার বার্ষিক গৌতম আদানির দাবি, ''পুরনো এবং ভুল তথ্য দিয়ে সংস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে রিপোর্টে। যার মাধ্যমে শেয়ারের দাম কমিয়ে মুনাফা করা হয়েছে। ...এই ঘটনা গোষ্ঠীর উপরে বিভিন্ন বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। যতদ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, দুরভিসন্ধি থাকা কিছু মহল এর সুযোগ নিয়েছে। বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে গোষ্ঠী সম্পর্কে ভুল বার্তাও দিয়েছে।''

এই প্রসঙ্গেই সুপ্রিম কোর্টের কমিটির রিপোর্টে কথাও তুলে এনেছে আদানি কর্ণধার। তাঁর দাবি, এতে যে সমস্ত ব্যক্তিরা রয়েছেন, তাঁদের ন্যায়পরায়ণতা প্রশ্নাতীত। এই কমিটিই গোষ্ঠীর তরফে কোনও অনিয়ম খুঁজে পায়নি। উল্টে তাঁরা যে বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন এবং যে ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেন, তার প্রশংসাই উঠে এসেছে রিপোর্টে। সঙ্গে বলা হয়েছে ভারতের বাজারকে অস্থির করে তোলার প্রচেষ্টার কথাও। গৌতমের আরও দাবি, সেবি এখনও রিপোর্ট জমা দেয়নি। তাঁরা অবশ্য নিজেদের পরিচালনার মান নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। যে কারণে কোনও জল্পনায় না গিয়ে সেবি এবং সুপ্রিম কোর্ট কমিটির পূর্ণ রিপোর্টের জন্য সব মহলকে আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।