কোন চাকরির কত দর? নিয়োগ দুর্নীতির লিস্ট দেখলে চোখ কপালে উঠবে

কোন চাকরির কত দর? নিয়োগ দুর্নীতির লিস্ট দেখলে চোখ কপালে উঠবে

নিয়োগের ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা নাকি শিউরে ওঠার মতো। সম্প্রতি এমনই মন্তব্য করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। আর ইডি সূত্রের যে তথ্য সামনে আসছে, তা চমকে দেওয়ার মতো। নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল, যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পাননি, এমন অভিযোগের কথা অনেকেরই জানা।

কিন্তু তাই বলে পণ্যের মতো বিক্রি হয়েছে চাকরি? মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ অফিসারেরাই সেই কারবার ফেঁদেছিলেন? ইডির চার্জশিট বলছে, একেক রকম চাকরির একেক রকম দর হাঁকা হত। আবার অনেকে সেই দর মিটিয়েও চাকরি পেতেন না!

কোন চাকরির কত দর?

TV9 বাংলার তরফে এমন অনেক চাকরি প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। নাম, পরিচয় প্রকাশ না করতে চাইলেও তাঁরা চাকরির দাম জানিয়েছেন।

প্রাথমিক শিক্ষকে চাকরি পেতে দিতে হত ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকা।
উচ্চ প্রাথমিকের চাকরির দর ছিল ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা।
গ্রুপ সি বা গ্রুপ ডি-র চাকরির জন্য দিতে হত ১৪ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা।
এসএলএসটি (নবম দশম)-এর চাকরির জন্য দিতে হত ১৬ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা।

কারা নিতেন টাকা?

ইডির চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, তত্‍কালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ঘনিষ্ঠ আধিকারিকরা টাকা চাইতেন। তবে সবাই যে তাঁদের টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন এমন নয়। চার্জশিটে বলা হয়েছে, অসহায় প্রার্থীদের সঙ্গে কী ভাবে চরম প্রতারণা করা হয়েছিল।

কী বলেছেন শেফালি, জয়ন্তরা?

মালদহের শেফালি মণ্ডলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে। ২০১৭ সালে পার্থর আপ্তসহায়কের সূত্রেই এক অফিসারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। তাঁর দুই মেয়ের চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। মাথা পিছু চাওয়া হয়েছিল ৮ লক্ষ টাকা করে। মেয়েদের চাকরির লোভ সামলাতে না পেরে সে টাকা দিয়েও দিয়েছিলেন শেফালি। কিন্তু চাকরি হয়নি। উল্লেখ রয়েছে জয়ন্ত বিশ্বাস নামে আরও এক ব্যক্তি। তাঁর স্ত্রী পাপিয়া ২০১২ সালে টেট দিয়ে পাশ করতে পারেননি। পরে ২০১৪ সালে ফের টেট দেন পাপিয়া। পাশও করেন। চাকরিটা যাতে হয় তার জন্য ২০১৭ চন্দন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। সঞ্চয়ের সব টাকা দিয়েও মেলেনি চাকরি! এ ভাবেই চাকরি বিক্রির কেলেঙ্কারির ভয়ঙ্কর চেহারা সামনে এসেছে ইডির চার্জশিটে।