আদালতের রায় জানার আগেই সব শেষ বেকারত্বের জ্বালা নিয়ে 'আত্মঘাতী' যুবক

আদালতের রায় জানার আগেই সব শেষ বেকারত্বের জ্বালা নিয়ে 'আত্মঘাতী' যুবক

 প্রাথমিক টেট ২০১৭ আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম রাজু গাজী। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুরিয়ায়। নিজের দাবি আদায়ের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজু। মামলাটি এখনও আদালতে বিচারাধীন। কিন্তু সেই মামলার রায় আর দেখে যাওয়া হল না রাজুর। শুক্রবার রাতে ঠাকুরনগর স্টেশনের কাছে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।

জানা গিয়েছে, চাকরি না পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন রাজু। প্রাথমিকভাবে অনুমান, সেই অবসাদের কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন রাজু গাজী।

জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর প্রাথমিক টেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর, রাজু গাজীও অন্যান্যদের টেট পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আন্দোলন শুরু করে। অবশেষে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি পরীক্ষা হয় এবং পরবর্তী সময়ে সেই আন্দোলন চলতে থাকে। পরে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি টেট-এর ফলপ্রকাশ হয়। তাতে ৯৮৯৬ জন প্রার্থী পাশ করেন। কিন্তু প্রাথমিক পর্ষদের তরফে সেই সময় তাঁকে অকৃতকার্য জানানো হয়েছিল। ওবিসি (এ) ক্যাটেগরিতে টেট পাশ হয় ৮২.৫ নম্বরে (৫৫ শতাংশ নম্বরে)। পরে আরটিআই করে রাজু দেখতে পান, তাঁর টেট স্কোর ৮২ রয়েছে। অর্থাত্‍ C TET নিয়ম অনুযায়ী পাস, কিন্তু রাজ্য সরকার প্রাথমিক পর্ষদ ৮২ নম্বরে গ্রহণযোগ্য করেনি। সে বিষয়ে হাইকোর্ট আইনজীবীরা মামলা করেছে ও বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে।

পরবর্তী সময়ে রাজু গাজী আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তর মারফত হাইকোর্টে মামলা করেন এই মর্মে প্রাথমিক টেট ২০১৭ পরীক্ষা ১৫০ টি প্রশ্ন মধ্যে ৮ টি প্রশ্নের উত্তর ভুল দেওয়া হয়েছে। সেই মামলাটি এখনও আদালতে বিচারাধীন। ইতিপূর্বেই প্রাথমিক টেট ২০১৪ পরীক্ষার প্রশ্ন ভুল বিষয়ে আদালতের নির্দেশে অনেক নিয়োগপ্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। আর এরই মধ্যে মৃত্যু ওই যুবকের।

পরিবারের লোকরা জানিয়েছেন, শনিবার বিকেল পাঁচটার সময় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রাজু। বলেছিলেন, বনগাঁর দিকে যাবেন। তারপর রাত আটটার পর বাড়ির লোকেরা রাজুকে ফোন করেছিলেন। তখন ও-প্রান্ত থেকে এক অজ্ঞাতপরিচয় কণ্ঠ আসে। বলা হয়, দেহ রাখা আছে জিআরপি অফিসে।