মমতার গুণগ্রাহী, কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে যা হচ্ছে ক্ষমার অযোগ্য: কংগ্রেস নেতা দ্বিগ্বিজয় সিং

মমতার গুণগ্রাহী, কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে যা হচ্ছে ক্ষমার অযোগ্য: কংগ্রেস নেতা দ্বিগ্বিজয় সিং

 পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা ও অশান্তির ঘটনা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন সর্বভারতীয় কংগ্রেসের কোনও নেতা। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাহুল গান্ধী ঘনিষ্ঠ প্রবীন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং (Dvigvijay Singh) সোমবার সকালে বলেন, 'বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটে যা হচ্ছে তা ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো।

আমি বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চারিত্রিক দৃঢ়তা ও প্রত্যয়ের গুনগ্রাহী। কিন্তু, যা ঘটছে তা ক্ষমার অযোগ্য।'

পঞ্চায়েত ভোটে বাংলায় হিংসা ও অশান্তির ঘটনা নিয়ে জাতীয় স্তরে কংগ্রেস গোড়া থেকে নীরব ছিল। তা নিয়ে বাংলায় প্রদেশ কংগ্রেসের অনেকের ক্ষোভ ছিল অপরিসীম। এমনকি প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র ও সম্পাদক সুমন রায়চৌধুরীর মতো নেতারা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের উদ্দেশে খোলা চিঠি দিয়ে বলেছিলেন, তিলে তিলে লড়াই করে, জীবন দিয়ে যে হাজার হাজার কর্মী কংগ্রেসকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, বেঙ্গালুরুতে বৈঠকের আগে তাঁদের কথা ভেবে দেখবেন'।

আবার বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা নিয়ে রাহুল গান্ধী কোনও প্রতিক্রিয়া না জানানোয় বিজেপিও লাগাতার খোঁচা দিয়েছে যাচ্ছে। বিজেপির সেই খোঁচা কৌশলগত। কংগ্রেস, তৃণমূল, আরজেডির মতো দলগুলি যখন বৃহত্তর বিরোধী ঐক্যের পথে হাঁটতে চাইছে, তখন স্মৃতি ইরানি, অমিত মালব্যরা বারবার প্রশ্ন তুলছেন, রাহুল গান্ধী কি বাংলায় মৃত্যু নিয়ে এই খেলা সমর্থন করছেন?

এহেন পরিস্থিতিতে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং এদিন মুখ খুলেছেন। তবে দিগ্বিজয়ের প্রতিক্রিয়া খুব যে তীব্র তা নয়। তিনি বলেছেন, 'আমি জানি কী সাহসিকতায় বাম জমানায় একই ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন আপনি। কিন্তু এখন যা হচ্ছে তা গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল নয়'।

দিগ্বিজয়ের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, 'মুর্শিদাবাদে তো কংগ্রেসই মারছে তৃণমূলকে। এই পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলেরই খুন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। দিগ্বিজয়ের উচিত তাঁর দলের কর্মীদের গণতন্ত্রের পাঠ পড়ানো'।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দিগ্বিজয়ের প্রতিক্রিয়া থেকেই পরিষ্কার যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল সম্পর্কে এমন কোনও মন্তব্য করতে তিনি যা বৃহত্তর ঐক্যে আঁচ ফেলতে পারে। কংগ্রেসের জাতীয় স্তরের নেতাদের মতে, দিল্লি থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া বাংলায় কংগ্রেস কর্মীদের সুরাহা হবে না। বাংলায় তাঁরা যদি রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতে চান, তাহলে তাঁদেরই লড়াই করতে হবে। এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বামেদের বিরুদ্ধে এই লড়াই করেছিলেন। তিনি শুধু দিল্লির দিকে তাকিয়ে থাকেননি। মাঠে নেমে লড়াই করেছিলেন। বাংলার কংগ্রেসের নেতা, কর্মীরা তা করুক না, দিল্লি বাধা দেবে না।