দুই পড়শি দেশের বিবাহ বন্ধন, বাংলাদেশি মহিলাকে বিয়ে তামিল যুবতির

দুই পড়শি দেশের বিবাহ বন্ধন, বাংলাদেশি মহিলাকে বিয়ে তামিল যুবতির

এবার দুই দেশের মধ্যে রচনা হল বিবাহ বন্ধনের গল্প। চেন্নাইতে এক বাংলাদেশি মহিলাকে বিয়ে করলেন এক তামিল ব্রাহ্মণ মহিলা। প্রথাগত রীতি মেনেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন দুই দেশের নারী। গত ৩১ অগস্ট সুবিক্ষা সুব্রমানির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন টিনা দাস। বর্তমানে তাঁরা দু'জনেই কানাডায় বসবাস করেন।

বাংলাদেশের একটি রক্ষণশীল হিন্দু পরিবারে বেড়ে ওঠা টিনার। সুবিক্ষা তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। বর্তমানে কানাডা নিবাসী। বর্তমানে দু’জনেই কানাডার ক্যালগারিতে থাকেন। ছয় বছর আগে একটি অ্যাপের মাধ্যমে দু’জনের দেখা হয়। কয়েক বছর ধরে সম্পর্কে থাকার পর তাঁরা অবশেষে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। সমকামী বিয়ে তাও আবার দু’জন দুই বঙ্গের। অনেকেই মনে করতে পারেন এতে হয়ত পরিবারের সমর্থন মেলেনি। কিন্তু এর ঠিক উল্টোটাই ঘটেছে এই দুই যুবতির ক্ষেত্রে। আর পাঁচটা বিয়ের মতোই সব রীতিনীতি মেনে বিবাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল তাঁদের। দুই পরিবারের সমর্থনেই সম্পূর্ণ প্রথাগত ব্রাহ্মণ রীতিনীতি মেনে চার হাত এক হয় তাঁদের।

২৯ বছর বয়সী সুবিক্ষা পেশায় একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি চিন্তায় ছিলেন যে, তাঁর রক্ষণশীল বাবা-মা প্রথাগত হিন্দু রীতিতে তাঁদের এই বিয়েতে সম্মতি দেবেন কি না। তিনি বলেন, ‘আমরা যেরকম ভেবেছিলাম আমাদের বাবা-মা আমাদের পাশেই ছিলেন। প্রথাগত ব্রাহ্মণ মতে বিয়ের সমস্ত নিয়ম কানুন পালন করিয়েছেন।’ ৩৫ বছর বয়সী টিনা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি এর আগে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে সেই বিয়েতে সমাপ্তি টানার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বর্তমানে টিনা ক্যালাগারিতে ফুটহিলস মেডিক্যাল সেন্টারে রোগীদের রক্ষণাবেক্ষণে প্রধান হিসেবে কাজ করেন। ২০০৩ সালে বাবা-মা কে নিয়ে তিনি কানাডাতে চলে যান। সুবিক্ষার জীবনে পথচলা সহজ হলেও টিনাকে অনেকগুলো বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে। টিনার বাবা-মা এলজিবিটিকিউ কমিউনিটি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল ছিলেন না। মেয়ের কোনও সমস্যা অসুখ রয়েছে ভেবে, ১৯ বছরেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন। বিয়ের ফলে সব ঠিক হয়ে যাবে বলেই আশা করেছিলেন তাঁর বাবা-মা। তবে অবশেষে নিজের উপযুক্ত জীবনসঙ্গিনীকে খুঁজে পেয়েছেন টিনা। আপাতত চার হাত এক হয়ে গিয়েছে। দুই দেশ সাক্ষী থাকল দুই সমকামী মহিলার মিলনের।