নন্দীগ্রামে বসেই বিজেপি ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন শুভেন্দু

নন্দীগ্রামে বসেই বিজেপি ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন শুভেন্দু

গতকালই সামনে এসেছে যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI'র পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা ওই সংস্থার শীর্ষ প্রশাসনের অনুমতি চেয়েছেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর(Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে নারদা ও সারদা কাণ্ডের তদন্ত শুরু করার জন্য। দিল্লির নর্থ ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই মামলার ঘটনায় অপর এক তদন্তকারী সংস্থা ED-ও শুভেন্দুকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পথে হাঁটা দিতে চাইছে।

এই দুই তদন্তকারী সংস্থাই দিল্লিতে শাহি দরবারে আর্জি জানিয়েছে। সেই আর্জি মঞ্জুর হলেও হতে পারে। সেই দরবার থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই দুই সংস্থাই ডেকে পাঠাবে বাংলার বিরোধী দলনেতাকে। ঠিক এই রকম অবস্থায় শনিবার বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন শুভেন্দু তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে(Nandigram) বসেই কার্যত বিজেপি(BJP) ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন সংবাদমাধ্যমের কাছে যা রাজ্য রাজনীতিতে একদিকে যেমন শোরগোল ফেলে দিয়েছে ঠিক তেমনি প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, এবার তাহলে বিজেপি ছেড়ে কোথায় যেতে চান শুভেন্দু?

ঠিক কী বলেছেন শুভেন্দু? নন্দীগ্রামে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের হানাহানি নিয়ে মুখ খুলেছেন বিরোধী দলনেতা। সেই সঙ্গে তাঁর আক্রমণের নিশানা বানিয়েছেন রাজ্যের শাসক দল ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকেও। সেই সূত্রেই কাঁদো কাঁদো মুখে বিধ্বস্ত অবস্থায় জানিয়েছেন, 'দিল্লির কে কি ভাববে, অন্যে কে কি বলবে, আমার জানার দরকার নেই। আমি মন্ত্রীত্ব ছেড়ে এখানে এসেছি। আমি একটা উদ্দেশ্য নিয়ে, লক্ষ্য নিয়ে এসেছি। আমার লক্ষ্যে আমি অবিচল থাকব। তার জন্য আমাকে যা করতে হয়, পতাকা নিয়ে, পতাকা ছেড়ে, আমি তা করব। বাংলা নিয়ে ভারত সরকারও ভাবছে কিনা আমি জানি না। রাজ্যপালও কিছু করেন না। ভারত সরকারের টাকা আমি এদের পেতে দেব না। ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ আছে। আবাসের এরা একটা টাকা পায় সেটা বন্ধ করব। সব বিডিও-রা জেলে যাবে। সব ডিএম জেলে যাবে।' তাঁর এই মন্তব্য শুনে ও দেখেই অনেকে মনে করছেন খুব শীঘ্রই বিজেপিতে শুভেন্দুর পর্ব ইতি হতে চলেছে বিজেপিতে। শুভেন্দু নিজেই সেটার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন। এদিন তিনি একবারের জন্যও বিজেপির নাম নেননি যা বড়সড় পদক্ষেপেরই ইঙ্গিত তুলে ধরছে।

এর আগে তৃণমূলের তরফে অনেকেই দাবি করেছেন, শুভেন্দু বিজেপিতে গিয়েছেন নারদা সারদা কাণ্ডের হাত থেকে বাঁবার জন্য। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, শুভেন্দুকে বাঁচাতে গিয়ে বিজেপির গায়ে বেশি করে কাদা লেগে যাচ্ছে। আদালতে কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে CBI ও ED-কে। সেই সঙ্গে দুই তদন্তকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাও ধাক্কা খাচ্ছে। সর্বোপরি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বার বার অভিযোগ জমা পড়ছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের তরফে শুভেন্দুকে নিয়ে। নানা নির্বাচনের পরিসংখ্যানও বলছে শুভেন্দুর বিজেপির যোগদানে সেভাবে লাভবান হয়নি পদ্মশিবির। তাই তাঁকে আর টানতে চাইছেন না পদ্মশিবিরের শীর্ষ নেতারা। তাই CBI ও ED সম্ভবত খুব শীঘ্রই শুভেন্দুকে জেরার অনুমতি পেয়ে যাবেন শাহি দরবার থেকে। সম্ভবত শুভেন্দু নিজেও সেই ইঙ্গিত পেয়ে গিয়েছেন। তাই তিনি নিজেও এবার বিজেপি ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন। আর সেটাও কাঁদো কাঁদো মুখে। একবারের জন্য বিজেপির নামটাও নিলেন না।