সাস্টেনেবল ইজ অ্যাটেনেবল

সাস্টেনেবল ইজ অ্যাটেনেবল

দেশকে সাস্টেনেবল করে তুলতে Tata Power গ্রীন এবং ক্লিন এনার্জি ক্ষেত্রে প্রচুর উন্নতি করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে।

ভারতের লক্ষ্য ২০৭০ সালের মধ্যে শূন্য নির্গমনে পৌঁছানো, তাই আমাদের দেশ বর্তমানে স্বচ্ছ, সবুজ এবং আত্মনির্ভর অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে।

ক্লিন এনার্জিতে পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়াকে সফল করে তোলার জন্য দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলির কাছ থেকেও সহযোগিতা প্রয়োজন।

এই পরিস্থিতিতে, News 18 Network একটি বিশেষ উদ্যোগ চালু করেছে, যার নাম হল Tata Power: সাস্টেনেবল ইজ অ্যাটেনেবল। এর লক্ষ্য আত্মনির্ভর এবং লো-কার্বন ভবিষ্যত্‍ গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ব্যবসা, সরকার ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা এবং যোগাযোগ গড়ে তোলা।

এই লক্ষ্য অর্জন করতে আমাদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য করার দায়িত্ব বর্তায় বিদ্যুত্‍ সেক্টরের উপরে। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম দেশীয় বিদ্যুত্‍ সংস্থা হল Tata Power এবং এই সংস্থার পুনর্নবীকরণযোগ্য- পোর্টফোলিওর মধ্যে ৩২% রয়েছে ক্লিন গ্রীন এনার্জিতে, যার ফলে তারা এই ক্ষেত্রে অন্যতম পথিকৃত্‍ হিসেবে ভারতের আত্মনির্ভর ভবিষ্যত্‍ গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে। নতুন প্রযুক্তির ব্যাটারি সহ সৌর ছাদ, EV চার্জার, সৌর পাম্প এবং বিদ্যুত্‍ পরিচালনাকারী সমাধান প্রদান করার মাধ্যমে Tata Power ভারতের বিদ্যুত্‍ ক্ষেত্রে বিপুল রূপান্তরে অন্যতম অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করতে চলেছে।

"সাস্টেনেবল ইজ অ্যাটেনেবল" এই প্রসঙ্গে একটি আলোচনায় News 18 Network এর সাথে যোগ দিয়েছিলেন ডঃ প্রবীর সিংহ। তাঁর মতে, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হল "বিদ্যুত্‍ ক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সাম্য এবং আত্মনির্ভরতা" প্রদান করা। তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বের দরবারে ভারতের অর্থনীতি দ্রুত বেড়ে উঠছে এবং "বিশ্বজুড়ে বিদ্যুতের চাহিদা যে হারে বৃদ্ধি পেতে চলেছে তা সবচেয়ে বেশি এই দেশে অনুভূত হবে।" তাঁর কথায়, "আগামী কয়েক দশকে, ক্লিন এবং গ্রীন এনার্জি এই অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে।"

সেই সঙ্গে বিদ্যুত্‍ সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং তাকে পকেটসাধ্য করে তোলা, এই দুইটি বিষয়ের উপরে তিনি জোর দিয়েছেন। Tata Power এর লক্ষ্য হল বিভিন্ন ব্যবসা এবং গ্রাহকদের আত্মনির্ভর লাইফস্টাইল পেতে সাহায্য করার মাধ্যমে ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করতে সাহায্য করা। ডঃ সিংহ জানিয়েছেন, দেশের উন্নয়নে সাহায্য করার জন্য "আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হল সকলকে এমন দিশা দেখানো যার মাধ্যমে পৃথিবীর জলবায়ুকে পুরোনো রূপে ফেরানো সম্ভব।"

ভারতের কাছে এই রূপান্তর কোনও বিকল্প নয়, বরং এটি হল "দেশের নাগরিকদের স্বার্থে গ্রহণ করা একটি প্রতিশ্রুতি।" এই বিষয়টি "বিশদে ব্যাখ্যা" করতে গিয়ে ডঃ সিংহ বলেছেন, বর্তমানে Tata Power এর গ্রীন এনার্জি পোর্টফোলিও ৩২%, এই সংস্থার লক্ষ্য হল এটি বাড়িয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ৭০% এবং ২০৪৫ সালের মধ্যে ১০০% তে নিয়ে যাওয়া, সেক্ষেত্রে Tata Power হবে এই লক্ষ্যে পৌঁছনো প্রথম ভারতীয় সংস্থা।

রূপান্তরের পথে এই যাত্রা অত্যন্ত বর্ণময় হতে চলেছে। ডঃ সিংহ মনে করেন যে, নতুন প্রযুক্তি এবং নিত্যনতুন উদ্ভাবনের সাহায্যে ক্লিন এনার্জি সমাধানগুলি ক্রমশ বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের জন্য উপযুক্ত এবং গ্রাহকদের পক্ষেও পকেটসাধ্য হয়ে উঠবে। যেমন, Tata Power বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মাইক্রো-গ্রিড উদ্যোগ চালায়। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পগুলির জন্য বিভিন্ন বিদ্যুত্‍ পরিচালনাকারী পরিষেবা নিয়েও কাজ করা হচ্ছে। বর্তমান উদ্দেশ্য হল, ক্লিন এনার্জি সমাধানগুলি গ্রহণ করার পদ্ধতি আরও দ্রুত করে তোলা এবং পরিমাপযোগ্যতা অর্জন করা।

ডঃ সিংহের মতে বিশ্বজুড়ে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে চলেছে। প্রথমটি হল ডিকার্বনাইজেশান, যেখানে ক্লিন এবং গ্রীন এনার্জি ক্রমশ একটি নিয়মে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে চলেছে। দ্বিতীয়টি হল, শহর এবং গ্রাম- উভয় ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ডিসেন্ট্রালাইজেশান বা বিকেন্দ্রীকরণ করা। এর জন্য হাইব্রিড সমাধান-যুক্ত মডেল প্রয়োজন। যেমন, বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে দিনের বেলা সৌর বিদ্যুত্‍ এবং রাতে বায়ুচালিত বিদ্যুত্‍ ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই ধরনের উদ্যোগগুলির সাথে তরুণ উদ্যোগপতিদের অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা প্রয়োজন, যাঁরা নিজেদের জীবন গ্রীন প্রোজেক্টে সমর্পণ করবেন। এর জন্য দিল্লীতে Tata Power দ্বারা নির্মীত ক্লিন এনার্জি ইন্টারন্যাশনাল ইনকিউবেশন সেন্টারের তরফ থেকে "ক্লিন এনার্জি নিয়ে কাজ করছে এমন বহু স্টার্টআপকে মার্কেট ইনকিউবেশন সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ল্যাব" অফার করা হয়। এই স্টার্টআপগুলির লক্ষ্য হল "বিশাল সামাজিক এবং পরিবেশগত প্রভাব" তৈরি করা। সকলের কাছে বিদ্যুত্‍ পৌঁছে দেওয়া, বিদ্যুত্‍ সাশ্রয় এবং স্বচ্ছ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দারুণ কোনও আবিষ্কার- যা হল ফোকাসের মূল ক্ষেত্র। ডঃ সিংহের মতে, এই বিষয়গুলির সংমিশ্রণ "পৃথিবীতে এখন যে পদ্ধতিতে বিদ্যুত্‍ উত্‍পাদন এবং ব্যবহার করা হয়, তা সম্পূর্ণ বদলে দেবে।"

ডঃ সিংহের কথায়, প্রায় একই সাথে, বিদ্যুত্‍চালিত যানবাহনও অদূর ভবিষ্যতে রূপান্তরিত হবে। EV চার্জিং পরিকাঠামো বর্তমানে নিঃসন্দেহে ক্রেতাদের কাছে অন্যতম চিন্তার বিষয়। গ্রাহকদের এই "রেঞ্জ সম্পর্কিত উদ্বেগ" নিরসনের জন্য Tata Power দেশজুড়ে ২৩০০টির বেশি EV চার্জিং নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে, যা গোটা দেশের মধ্যে বৃহত্তম। তাছাড়াও, এই সংস্থা গ্রাহকদের হাতে ২০,০০০-এর বেশি হোম চার্জার তুলে দিয়েছে। সরকার এবং অটোমোবাইল অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স (OEMs)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই সংস্থা দেশের ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকা চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।

তৃতীয় বিষয়টি হল, ডিজিটাইজেশান। এক্ষেত্রে দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে বিদ্যুতের সংযোগ পৌঁছানো নিশ্চিত করাই হল মূল লক্ষ্য। ভ্যালু চেন, জেনারেশান, ট্রান্সমিশন এবং ডিস্ট্রিবিউশান এই সকল ক্ষেত্রে নিত্য নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব হচ্ছে, যার জেরে চূড়ান্ত গ্রাহকদের স্বার্থে সীমাহীন সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স এবং মেশিন লার্নিং সম্পর্কে চলতে থাকা বিভিন্ন গবেষণা ডেটা কালেকশান এবং অ্যানালিটিক্স-এ নতুন সুযোগ প্রদান করবে। এই ধরনের প্রয়াসগুলি বিদ্যুত্‍ সাশ্রয় করতে অনেকটাই সাহায্য করবে, কারণ বিভিন্ন ব্যবসা এবং গ্রাহকরা বিদ্যুত্‍ ব্যবস্থা সম্পর্কে আরও অনেক বেশি ওয়াকিবহাল হয়ে উঠবেন, যা আগে কখনো হয়নি।

ক্লিন এবং গ্রীন এনার্জির এগিয়ে যাওয়ার পথে নিঃসন্দেহে এমন প্রচুর চ্যালেঞ্জ আসবে যার মোকাবিলা করার জন্য সরকারের তরফে প্রচুর সমর্থন ও সাহায্য প্রয়োজন হবে। ডঃ সিংহ বলেছেন, "সম্প্রতি ইউটিলিটি ও এন্টারপ্রাইজ ও ইন্ডাস্ট্রির জন্য পুনর্নবীকরণ ক্রয়ের বাধ্যতামূলক পরিমাণ হিসেবে ৪৭% টার্গেট ঘোষণা করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি এবং এটি আমাদের ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ GW ক্লিন এনার্জি-তে পৌঁছানোর উদ্দেশ্য পূরণে সাহায্য করবে।" এই লক্ষ্যমাত্রাগুলি পূরণ করার জন্য ইউটিলিটিগুলিকে ইনসেন্টিভ দেওয়া এবং পূরণ না করলে জরিমানা দেওয়ার বন্দোবস্ত থাকা দরকার।

তিনি আরও জানিয়েছেন যে, অধিকাংশ রাজ্যের ডিসকমগুলি অর্থনৈতিক সঙ্কটে রয়েছে। তাদের বাণিজ্যিক ভাবে সফল করে তোলা অত্যন্ত জরুরি, যাতে তারা আরও বেশি পরিমাণে পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুত্‍ কিনতে পারে। বিদ্যুতের ডিসেন্ট্রালাইজেশান করা জরুরি যাতে গ্রাহকদের বিদ্যুত্‍ উত্‍পাদন করার কাজে সক্ষম করে তোলা যায়। গ্রামীণ এলাকায় সৌর পাম্পের সক্রিয় প্রচার করা হচ্ছে, এখানে একজন কৃষক তাঁর নিজস্ব কাজে এই বিদ্যুত্‍ ব্যবহার করার পাশাপাশি জল বিক্রি করার মাধ্যমে অতিরিক্ত আয়ের পথ প্রশস্ত করতে পারেন।

মূলত এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে গ্রাহক এবং বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির কর্পোরেটদের মধ্যে সমন্বয়ের উপরে। প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী সমাধানগুলির ব্যবহার আমাদের ভবিষ্যত্‍কে আরও বেশি স্বচ্ছ এবং সবুজ করে তোলার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই ধরনের ছোট ছোট পদক্ষেপের মাধ্যমে 'সাস্টেনেবল ইজ অ্যাটেনেবল' লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে, বক্তব্য শেষের আগে জানালেন ডঃ সিংহ।