লক্ষ্য খুনী ধরা এদিক ওদিক ফেলে রাখা হল স্যুটকেসে ভরা প্রায় ৭০টি মৃতদেহ

লক্ষ্য খুনী ধরা এদিক ওদিক ফেলে রাখা হল স্যুটকেসে ভরা প্রায় ৭০টি মৃতদেহ

উদ্দেশ্য খুনিদের ধরা। আর তার জন্য প্রায় ৭০টি পচনশীল মৃতদেহকে ডাস্টবিন এবং স্যুটকেসে ভরে রাস্তার উপর ফেলে রাখা হয়েছে। এই অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার বুশল্যান্ডে। আসলে এটা একটা ফরেন্সিক গবেষণার অংশ। হত্যার পর, নিহত ব্যক্তির দেহে কীভাবে পচন ধরে, তা অধ্যয়ন এবং বোঝার আশায় স্যুটকেস এবং ডাস্টবিনগুলিতে মৃতদেহ দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।

মৃতদেহের উপর পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার পরিবর্তন এবং আর্দ্রতার কী প্রভাব পড়ে, তা বোঝার চেষ্টা করছেন।

তবে, এই গবেষণার জন্য কোনও মানুষের দেহ বা দেহাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে না। তার বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে মৃত শূকরের দেহ। পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের সংস্পর্শে দেহগুলি রেখে দেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রা ও আদ্রতার প্রভাবে শূকরের মৃতদেহগুলিতে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ অধ্যয়ন করা হচ্ছে। গবেষকদের আশা, এই গবেষণা কোনও হত্যার ক্ষেত্রে অপরাধের দৃশ্য পুনর্গঠনে তদন্তকারীদের সহায়তা করবে।

মারডক ইউনিভার্সিটির ফরেনসিক সায়েন্সের সিনিয়র লেকচারার পাওলা ম্যাগনি জানিয়েছেন, এর জন্য প্রায় কয়েক ডজন শূকরের মৃতদেহ, নিহতের দেহ লুকিয়ে রাখার সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে রেখে দেওয়া হয়েছে। গবেষকরা এই সম্ভাব্য স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্যুটকেস, চাকা লাগানো ডাস্টবিন, গাড়ির ডিকি, এবং ওয়্যারড্রব এবং আলমারি। ম্যাগনি বলেছেন, “অপরাধীদের চেষ্টা থাকে, যাতে সহজে মৃতদেহ খুঁজে না পাওয়া যায়। এর জন্য তারা এমন কিছুর খোঁজ করে, যার মধ্যে তারা অস্থায়ীভাবে মৃতদেহ রেখে দিতে পারে এবং অপরাধের স্থান থেকে অন্য জায়গায় দেহ স্থানান্তর করতে পারে। তাই, তদন্তকারীদের সামনে সাধারণত দুটি অপরাধস্থল থাকে। প্রাথমিক অপরাধস্থল হল যেখানে মৃত্যু বা হত্যা ঘটে। আর দ্বিতীয় অপরাধস্থল হল প্রাথমিক অপরাধের জায়গা থেকে, যেখানে মৃতদেহ স্থানান্তর করা হয়।”

ঘটা হল, প্রাথমিক অপরাধস্থল থেকে দ্বিতীয় অপরাধস্থলে দেহ স্থানান্তরের মধ্যে মৃতদেহে অনক পরিবর্তন ঘটে যায়। পচন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। ম্যাগনির মতে, তাঁদের এই অদ্ভুত গবেষণা অপরাধের পুনর্নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য করবে। তিনি বলেছেন, “ঘটনাগুলির পুনর্গঠনে সময়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের মাধ্যমেই অপরাধী, অপরাধের স্থান এবং অপরাধের উদ্দেশ্য চিহ্নিত করা যায়। একজন ফরেনসিক প্যাথলজিস্টের কাছে এই বিষয়গুলি নির্ধারণের জন্য মাত্র তিন দিন মতো সময় থাকে। পচনশীল দেহে যে পোকামাকড় জড়ো হয়, তারাই বলে দেয় ঠিক কোন সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।” নয়া গবেষণা এই বিষয়ে আরও অনেক তথ্য দেবে বলে আশা করছেন তাঁরা।