একটা একটা করে কমছিল হাঁসের সংখ্যা! কারণ খুঁজতে গিয়ে চোখ কপালে কানাইবাবুর
সকালে উঠে হাঁসগুলিকে পুকুড়ে ছেড়ে আসাই যেন কানাই সূত্রধরের এক মাত্র কাজ। কয়েক বছর ধরে হাঁস পালন করেই পেট চালাচ্ছেন তিনি। গ্রামের বাসিন্দারা দাবি একপাল হাঁস রয়েছে কানাইবাবুর। বেলা গড়াতেই তাদের ছেড়ে দেন ঝিল পাড়ে। বেশ কাটছিল জীবন। কিন্তু, এ সবের মাঝে আচমকাই একটা দুঃশ্চিন্তা গ্রাস করছিল কানাইবাবুকে।
কানাইবাবুর দাবি তাঁর কাছে ২৫টি হাঁস থাকলেও রবিবার সকালে দেখা যায় তা একেবারে কমে ৯ হয়ে গিয়েছে। মনে সন্দেহ থাকলেও এদিনও হাঁসগুলিকে ফের ঝিল পাড়ে খেলতে পাঠিয়ে দেন তিনি। আর তখনই ঘটে বিপত্তি। হঠাত্ই হাঁসগুলির চিত্কারের শব্দ পেয়ে সেদিকে ছুঁটে যান কানাই সূত্রধর। কিন্তু,ঘটনাস্থলে যেতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় তাঁর। চোখের সামনেই দেখেন তাঁর সাধের একটি হাঁসকে চেপে ধরে রয়েছে বিরাট অজগর।
ঘটনা আলিপুরদুয়ার শহরের আট নম্বর ওয়ার্ডের সূর্য নগর এলাকার। কানাইবাবুর চিত্কার শুনে সেখানে জড়ো হন অন্যান্য গ্রামবাসীরা। কিন্তু, তাতে যেন বেড়ে যায় বিপত্তি। শোরগোলের শব্দে লুকিয়ে পড়ে অজগরটি। বন দফতরে খবর দেওয়া হলেও দুপুর পর্যন্ত কোনও কর্মীরই দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ। ফলত, বিরাট সেই সাপের ভয় সঙ্গে নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। এ প্রসঙ্গে আট নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন কানাইবাবু। তাঁর দাবি, "প্রতিবছর ঝিল সাফাইয়ের জন্য টাকা পৌরসভায় আসে। কিন্তু কোনওবারেই কাজ হয় না। একটু-আধটু পরিস্কারের করে রেখে দেয়। এত জঞ্জালের জেরে যথেষ্ট বিপদের মধ্যে থাকতে হয় আমাদের। পোকামাকড়ের সঙ্গে বসবাস করতে হয়।" এরপরই আলিপুরদুয়ার পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের নতুন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। জানান, আগের জনের মতোই নতুন কাউন্সিলরও এ প্রসঙ্গে কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না।
প্রসঙ্গত, অজগর দেখা দিলেও সেটি আপাতত অধরাই। ফলত, এক দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটছে সূর্যনগর এলাকার বাসিন্দাদের। এই পরিপ্রেক্ষিতে পৌরসভার কর্মী মণীশ চন্দ্র দাসের বক্তব্য, "সাপ তো থাকতেই পারে। এখন তো দেখতে পেলাম না পরে আবার খবর পেলে দেখব।" কিন্তু বিশাল এই অজগরকে সঙ্গে করে কাটানো বর্তমানে খুব চাপের হয়ে উঠেছে সেখানকার বাসিন্দাদের। পাহারা দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠতেই মণীশ চন্দ্র দাসের বক্তব্য, "২৪ ঘণ্টা তো আর পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়।"