বিদেশের ধাঁচেই ভাবনা, গঙ্গার নীচে ৬ লেনের সুড়ঙ্গ! দৌড়বে পণ্যবাহী গাড়িও, শুরু সমীক্ষার কাজ

বিদেশের ধাঁচেই ভাবনা, গঙ্গার নীচে ৬ লেনের সুড়ঙ্গ! দৌড়বে পণ্যবাহী গাড়িও, শুরু সমীক্ষার কাজ

কলকাতা বন্দরের উদ্যোগে তৈরি হতে চলেছে গঙ্গার নীচে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের টানেল। আর সেই টানেল বানানোর জন্য সমীক্ষার কাজ শুরু করে দিল দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। বণিকসভা 'মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ‌্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ'-এর এক্সিম ফেসিলিটেশন সেলের উদ্বোধন করেন বিনীত কুমার।

সেখানে তিনি বলেন, আগামী ছ' থেকে সাত মাসের মধ্যে সমীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়ে যাবে। তারপরই চূড়ান্ত প্রস্তাব জাহাজ মন্ত্রকের কাছে অনুমোদনের জন‌্য পাঠানো হবে।

এই প্রকল্পে হাওড়ার দিকে টানেল ও কোনা এক্সপ্রেসওয়েকে একটি উড়ালপুলের মাধ‌্যমে সংযুক্ত করার করারও ভাবনা রয়েছে বলে বন্দর চেয়ারম‌্যান জানান। সম্ভাব‌্য ব‌্যয় ধরা হয়েছে দু'হাজার কোটি টাকা, জানিয়েছেন বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার। শহরে গঙ্গার নীচে ফের সুড়ঙ্গ। এবার ছয় লেনের সুড়ঙ্গ দিয়ে ছুটবে পণ্যবাহী গাড়ি। খিদিরপুর থেকে হাওড়া পর্যন্ত তৈরি হতে চলেছে এই টানেল। প্রায় ৮০০ মিটার লম্বা হবে এই সুড়ঙ্গ।কলকাতা ও হাওড়ার যানজট কাটাতে এই উদ্যোগ।

হাওড়ার জাতীয় সড়ককে সংযুক্ত করার জন্য তৈরি হবে ফ্লাইওভার। শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে এই কাজ।বেলজিয়ামের সুড়ঙ্গ এবার কলকাতায় । শীঘ্রই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর গঙ্গার নীচের সুড়ঙ্গের মতো ফের একটি সুড়ঙ্গ হতে চলেছে কলকাতায়। কলকাতা বন্দর সূত্রে খবর, এবার গাড়ি বা বলা ভাল কন্টেনার যাতায়াত করার জন্য সুড়ঙ্গ তৈরি হতে চলেছে। গঙ্গার নীচে কলকাতায় সুড়ঙ্গ কোথায় হবে? সংযোগকারী রাস্তা কোথায় হবে? এই সুড়ঙ্গ তৈরি হয়ে গেলে আর্থিক ভাবে কলকাতা বন্দর কতটা উপকৃত হবে বা যানজট কতটা কমবে তা নিয়ে একটা সমীক্ষা হয়। একই সঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে ডিটেইলড প্রজেক্ট রিপোর্ট বা ডিপিআর।

সূত্রের খবর, একটি আন্তর্জাতিক মানের সংস্থা এই ডিপিআর তৈরি করছে।বন্দর চেয়ারম্যান বিনীত কুমার জানিয়েছেন, ''বন্দর এলাকায় একাধিক জায়গা থেকে কন্টেনার আসে। রাস্তা দিয়ে কন্টেনার যাতায়াত করার জন্য ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। যানজট ঠেকাতে একাধিক ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি। তবে কলকাতা ও হাওড়া শহর এবং পাশ্ববর্তী এলাকা যানজটমুক্ত করতে এই টানেল কার্যকরী হবে। তবে টানেল কোথায় হবে ও কোন দু'টি অংশকে যুক্ত করবে তা সমীক্ষা ও ডিপিআর-এ উঠে আসবে।''এই ধরনের সুড়ঙ্গ অবশ্য নতুন নয়। বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প বন্দরের শেল্ড নদীর নীচে লিফকেনশোয়েক সুড়ঙ্গ আছে। এই সুড়ঙ্গ প্রায় ১.৩৭ কিলোমিটার লম্বা। এই সুড়ঙ্গ দুই লেনের। উচ্চতা এমন ভাবে করা আছে যেখানে ৫.১০ মিটার উচ্চতার কন্টেনার বা ট্রাক যাতায়াত করতে পারে।

কলকাতায় সুড়ঙ্গ তৈরি হলেও এমনটাই করা হবে বলে আশাবাদী বন্দরের আধিকারিকরা। খিদিরপুর ডক ও নেতাজি সুভাষ ডক দিয়ে প্রতিদিন বহু ট্রাক ও কন্টেনার যাতায়াত করে। এর অধিকাংশ ট্রাক আসে দ্বিতীয় হুগলি সেতু ধরে। যার জেরে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, সাঁতরাগাছি এবং অন্যদিকে ডানলপ, বিমানবন্দর-সহ একটা বড় অংশে যানজট তৈরি হয়। বিভিন্ন সময়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হলেও, যানজট নিয়ন্ত্রিত হয়নি।মাঝে চিন্তা করা হয়েছিল রো-রো পরিষেবা চালু করা হবে। যদিও রো-রো করে ট্রেলার নিয়ে যেতে যো ধরনের জেটি প্রয়োজন তা টেকনিকালি করা এখন সম্ভব হচ্ছে না। তাই আগামী দিনে ভরসা হতে চলেছে সুড়ঙ্গ।এই টানেল খিদিরপুর-গার্ডেনরিচ চত্বরে গঙ্গার নীচ দিয়ে ঢুকে যাবে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে অতিক্রম করে এটিকে জুড়ে দেওয়া হবে। মাঝে অবশ্য হাওড়ার দিকে ফ্লাইওভার তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞ সংস্থা এসে দেখে গিয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু করতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের সহযোগিতা চেয়েছে কলকাতা বন্দর।