'কার কাছে সৌগত এ সব শুনলেন? ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই ছিল না' প্রতিক্রিয়া অতনুর বাবার

'কার কাছে সৌগত এ সব শুনলেন? ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই ছিল না' প্রতিক্রিয়া অতনুর বাবার

বাগুইআটি-কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন মৃত কিশোর অতনুর বাবা বিশ্বনাথ দে। তাঁর দাবি, ছেলে নেশা করত, প্রচুর টাকা খরচ করত, এমন কোনও খবর কোনও দিন তাঁদের কাছে ছিল না। ছেলেকে কখনও বড় অঙ্কের টাকা হাতখরচের জন্য দেননি। দেওয়ার মতো সামর্থ্যও তাঁদের নেই।

আর ছেলের কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না। তাই সৌগত কোন তথ্যের ভিত্তিতে এমন কথা বলে বসলেন, সেটা তাঁরা জানতে চান।

বাগুইআটি-কাণ্ডে মৃত অতনু দে এবং অভিষেক নস্করকে নিয়ে একটি মন্তব্য করেছেন সৌগত। তিনি জানান, অতনু মাদকের নেশা করত বলে পুলিশ সূত্রে জেনেছেন। তা ছাড়া কোথা থেকে দুই পড়ুয়া বাইক কেনার জন্য ৫০ হাজার টাকা পেয়েছে, সেটাও বিস্ময়ের। সাংসদের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অতনুর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তাঁর দাবি, ছেলে নেশা করত, এমন কোনও তথ্য তাঁরা তো পুলিশের কাছ থেকে পাননি! তাঁর কথায়, ''উনি (সৌগত) আমাদের দুই ছেলেকে (অতনু এবং অভিষেক সম্পর্কে তুতো ভাই) নিয়ে অনেক কিছু বলেছেন। ছেলে নাকি নেশা করত। উনি কার কাছ থেকে এ সব শুনেছেন, আমাদেরও বলুন। না কি দেখেছেন?'' বিশ্বনাথ আরও বলেন, ''উনি, ফিরহাদ হাকিম, সুদীপ বসু, অদিতি মুন্সী তো আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। তখন তো এ সব কথা শুনিনি! আমরা দু'জন সন্তানহারা। আমরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই, করতেও চাই না। আমরা শুধু বিচার চাই।'' তাঁর সংযুক্তি, ''সৌগত প্রবীণ মানুষ। জনপ্রতিনিধি। কী ভাবে দুম করে এমন একটা কথা বলতে পারলেন উনি?''

সৌগতের মন্তব্যের রেশ ধরে অতনুর বাবা বলেন, তাঁরা ছেলেদের কখনও বড় অঙ্কের হাতখরচ দেননি। এই পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়টিও পরে ছেলের বন্ধুদের সূত্রে জেনেছেন। বিশ্বনাথ বলেন, ''আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছেন। ডাক্তার দেখাতে পারছি না। আমি নিজেও অক্সিজেন নিই। লাংসের সমস্যা আছে। ভেলোরের হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমরা ভগ্নীপতিও (অভিষেকের বাবা) অসুস্থ। দু'জন নিজেদের একমাত্র সন্তান হারিয়েছি। এমন সময়ে এমন মন্তব্য করলেন উনি (সৌগত)! এ নিয়ে বলার কোনও ভাষা আমার নেই।''

অন্য দিকে, অভিষেকের বাবা জানান, তাঁর ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাত্র ছ'হাজার টাকা ছিল। তিনি দুধ বিক্রি করেন। তা ছাড়া, ঘরভাড়া দিয়ে সংসার চালান। তিনি বলেন, ''আমার ছেলে মেলা দেখতে যাওয়ার জন্যও ৫০ টাকা নিয়ে যেত। ও টিউশন পড়তে গেলেও খবর নিতাম, পৌঁছেছে কি না।'' এই সময়ে সাংসদের এই মন্তব্যে তাঁরা মর্মাহত বলে জানান।