পিসিওএস প্রতিরোধে কী প্রয়োজনীয় খাদ্য

পিসিওএস প্রতিরোধে কী প্রয়োজনীয় খাদ্য

চলতি সেপ্টেম্বর পালিত হচ্ছে পিসিওএস সচেতনতার মাস হিসেবে। বলা হয়, প্রতি ১০ জন নারীর একজন পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে ভুগছেন। এ রোগ মূলত নারীদের শরীরে অ্যান্ড্রোজেন বা টেস্টোস্টেরনের মতো পুরুষ হরমোনের অতিরিক্ত উত্‍পাদন ও হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়।

এর কারণে মুখে পুরুষের মতো লোম, ব্রণ, অনিয়মিত মাসিক, চুল পড়া, মুড সুইং, বন্ধ্যত্বের মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। গবেষকেরা বলেন, পিসিওএস মূলত লাইফস্টাইল তথা জীবনযাপনসংক্রান্ত রোগ। অর্থাত্‍ কিশোরীকালে ওজন বৃদ্ধি, মন্দ খাদ্যাভ্যাস, কায়িক শ্রমহীনতা এর জন্য দায়ী। তাই পিসিওএসের চিকিত্‍সায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো ব্যালান্স ডায়েট। তাহলে দেখে নেওয়া যাক পিসিওএস প্রতিরোধে কী খাওয়া উচিত ও কী নয়।

যেসব খাবার খাবেন

সবুজ শাকসবজি: বেশি করে সবুজ শাকসবজি খান। ভিটামিনসমৃদ্ধ এসবে ক্যালরি কম। তাই ওজন হ্রাস ও পুষ্টির জন্য আদর্শ। সবুজ শাকসবজি, যেমন পুঁই, পালং প্রভৃতি ভিটামিন বির দুর্দান্ত উত্‍স।

লিন প্রোটিন: হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। লিন প্রোটিন হিসেবে মুরগি, টার্কি, টফু, স্যামন, চিংড়ি, টুনা, বিনস, প্রভৃতি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।

উপকারী চর্বি: সব চর্বি (ফ্যাট) কিন্তু শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নয়। এমন অনেক 'স্বাস্থ্যকর চর্বি' (হেলদি ফ্যাট) আছে, যেগুলো ডায়েটে রাখা যায়। যেমন অ্যাভোকাডো। হেলদি ফ্যাট এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিডের উত্‍স। বাদাম ও বীজ স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রোটিনের খুব ভালো উত্‍স।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাদ্য: এ তালিকায় রয়েছে স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, ওটস, গম, কাঠবাদাম, আখরোট এবং কালে, পালংশাক প্রভৃতি। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার দ্বারা পিসিওএসের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

ফাইবারসমৃদ্ধ খাদ্য: পিসিওএস হলে ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। ওটস, ব্রাউন রাইস, ব্ল্যাক বিনস, মসুর ডাল, সানফ্লাওয়ার সিড, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড প্রভৃতি ফাইবারের দুর্দান্ত উত্‍স। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার শরীরের ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ।

যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন

চিনি ও উচ্চ শর্করাজাতীয় খাদ্য: পিসিওএস রোগীদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। তাদের শরীরে ইনসুলিন ও গ্লাইসেমিক লেভেল বেশি থাকে। তাই উচ্চ শর্করাজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। চিনি, মিষ্টি, জুস, ক্যান্ডি, প্রভৃতি এড়িয়ে চলুন।

রেড মিট: কোলেস্টেরল কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় খাসি বা গরুর মাংসে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এমনকি ওজন বৃদ্ধি ও হরমোনাল ব্যালান্স নষ্ট হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

জাঙ্ক ফুড ও ভাজা খাবার: এ ধরনের খাবারে উচ্চ মাত্রায় লবণ, অস্বাস্থ্যকর মসলা, ট্রান্স ফ্যাট, কৃত্রিম মিষ্টি প্রভৃতি যুক্ত থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে ও রক্তচাপকে প্রভাবিত করে। এসব খাবার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে বাড়ায় ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।