শেষ ওভারে মাথায় কী ঘুরছিল ম্যাচের সেরা হার্দিকের

শেষ ওভারে মাথায় কী ঘুরছিল ম্যাচের সেরা হার্দিকের

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার হলেন হার্দিক পাণ্ড্য। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বল এবং ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন। আইপিএল থেকেই নতুন মেজাজে দেখা যাচ্ছে হার্দিককে। সেই মেজাজেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় এনে দিলেন ভারতকে। চোট নিয়ে খেলা, দীর্ঘ দিন বল করতে না পারা— নানা সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছিলেন হার্দিক।

সেখান থেকেই নিজেকে বদলে ফেলেছেন। আইপিএলের আগে কয়েকটা মাস কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তারই ফল পেয়েছেন ২২ গজে ফিরে। ফল পেয়েছে তাঁর আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি। গুজরাত টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। ব্যাট হাতে দলের ইনিংস গড়েছেন। বল হাতে বিপক্ষকে ভেঙেছেন। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সুফল পাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটও।

বদলে যাওয়া হার্দিক এখন প্রতিপক্ষের উদ্বেগ। বদলে যাওয়া হার্দিক দলকে চাপ মুক্ত করেন। ম্যাচ জেতান। যেমন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেতালেন রবিবার। প্রথমে বল হাতে বিপক্ষের উপর চাপ তৈরি করলেন। পরে ব্যাট হাতে দলকে চাপ মুক্ত করলেন। চার ওভার বল করে ২৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নিলেন। ১০ মাস আগে যে মহম্মদ রিজওয়ান ভারতের লজ্জার অন্যতম কারণ হয়ে দেখা দিয়েছিলেন, তিনি রবিবার দুবাইয়েও দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠতে পারতেন। কিন্তু পারলেন না। কারণ উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরালেন হার্দিক। একই ওভারে আউট করলেন খুশদিল শাহকে। পাকিস্তান তিন উইকেটে ৯৬ রান থেকে পাঁচ উইকেটে ৯৭ রান হয়ে গেল স্রেফ তিন বলের ব্যবধানে। পাক ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসা ইফতিকার আহমেদও তাঁর শিকার।

অলরাউন্ডার হার্দিক হতাশ করলেন না ব্যাট হাতেও। যখন ব্যাট করতে নামলেন, ভারত তখন ৮৯ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে। অদূরে থাকা জয় দূরে সরে যেতে শুরু করেছে। সে সময় ভরসা দিলেন ব্যাটার হার্দিক। রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গে জুটি বেধে দলকে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ জয় এনে দিলেন। তাঁর ব্যাট থেকে এল ১৭ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস। মারলেন চারটি বাউন্ডারি। ম্যাচ জেতালেন বিশাল একটা ছক্কা মেরে। দলকে জয় এনে দিয়ে খুশি হার্দিক। ম্যাচের পর তিনি বলেছেন, ''পরিস্থিতি বুঝে অস্ত্র ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। বল করার সময় সঠিক লেংথে বল করা জরুরি। ব্যাট করার সময় সুযোগ কাজে লাগাতে হয়। ঠিক মতো প্রয়োগ করতে হয়। ওভার ধরে ধরে পরিকল্পনা করেছি। মাথা ঠান্ডা রেখে খেলার চেষ্টা করেছি। জানতাম শেষ ওভারের জন্য পাকিস্তান নাওয়াজকে রেখে দিয়েছে। সাত রান দরকার ছিল শেষ ওভারে। ১৫ রান দরকার থাকলেও আমি সুযোগ খুঁজে নিতাম। আমার মনে হয়, ওদের বোলারদের উপর আমাদের থেকে বেশিই চাপ ছিল। শেষ ওভারে একটা ছয় দরকার ছিল। তাই বাড়তি কিছু করার চেষ্টাই করিনি।''

শেষ ওভারে সতীর্থ দীনেশ কার্তিকের মুখে যখন হতাশা ফুটে উঠছে, তখনও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন হার্দিক। যে আত্মবিশ্বাসে মাঠের বাইরে উড়িয়ে দিয়েছেন মহম্মদ নাওয়াজের বল। পাকিস্তানের জয়ের আশা।