'হাসিনা কোথায়? আমি তো তাঁকে দেখতে পাচ্ছি না' এলিজাবেথের স্মৃতিচারণায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী

'হাসিনা কোথায়? আমি তো তাঁকে দেখতে পাচ্ছি না' এলিজাবেথের স্মৃতিচারণায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী

রাজ পরিবারের নিয়ম অনুযায়ী আজ, সোমবার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশ থেকে রাষ্ট্রনায়করা পৌঁছে গিয়েছেন লন্ডনে। সেখানে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী (Bangladesh PM) শেখ হাসিনাও। চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন তিনি।

সেখানে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাত্‍কারে তিনি জানিয়েছেন, 'বাংলাদেশে শুধু আওয়ামী লীগের সময় নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়'।

সাক্ষাত্‍কারে তাঁকে রানি প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে নিজের ব্যক্তিগত স্মৃতি মনে করে হাসিনা (Sheikh Hasina) বলেন, '১৯৬১-তে তিনি যখন তত্‍কালীন পূর্ব পাকিস্তান সফর করেন তখন, আমার তাঁকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। আমরা খুব ছোট ছিলাম। আমরা আমার বাবার অফিসে ছিলাম কারণ আমরা জানতাম যে তিনি ঐ রাস্তা দিয়ে যাবেন। আমাদের পুরো পরিবার হাতে বাইনোকুলার নিয়ে জানালায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম, যাতে আমরা তাঁকে ভালোভাবে দেখতে পারি। আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে প্রতি সফরেই আমার দেখা হয়েছে। আমি সাতটি কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দিয়েছি। কাজেই প্রতিবারই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের ও কথা বলার সুযোগ হয়েছে। পাশাপাশি অলিম্পিক গেমসের সময় তিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ও আমি এসেছিলাম। সেটিও খুব ভালো একটি সুযোগ ছিল, আমরা দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছিলাম'।

হাসিনার কথায়, 'তাঁর স্মৃতিশক্তি ছিল চমত্‍কার। কমনওয়েলথ সম্মেলনে তিনি যখন আমাকে দেখতে পেতেন না, তখন খোঁজ নিতেন, 'হাসিনা কোথায়? আমি তো তাঁকে দেখতে পাচ্ছি না'।'সাক্ষাত্‍কারে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেছেন, '১৯৭৫ থেকে পরের ২১ বছর পর্যন্ত কোনও না কোনও সময় আমাদের দেশে সামরিক শাসন ছিল। আনুমানিক ২০ বার সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছিল। কোনও গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। প্রতিবারই রক্ত ঝরেছিল। আমার দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আমাকে সংগ্রাম করতে হয়েছে'।

কমনওয়েলথ গেমস (Commonwealth Games) বাংলাদেশের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? প্রশ্নে হাসিনা বলেছেন, 'আমরা একত্রিত থাকলে অনেক সুযোগ তৈরি হয়। সুতরাং এটি গুরুত্বপূর্ণ যে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময়ের জন্য, নতুন আইডিয়া পাওয়ার জন্য বা দেশ ও মানুষের জন্য ভালো কিছু সুযোগ তৈরি হয়। বর্তমানে বিশ্বে একটি দেশ একা এগিয়ে যেতে পারে না। পৃথিবীতে সবাই পারস্পরিক নির্ভরশীল। সুতরাং এরকম পরিস্থিতিতে সদস্য দেশগুলির জন্য কমনওয়েলথের গুরুত্ব অনেক। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করতে পারি, তাহলে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করতে পারব।

কারণ এখানে উন্নত, উন্নয়নশীল, দরিদ্র বা ছোট দ্বীপ দেশ-সবই রয়েছে'।সেইসঙ্গে গুমের অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘের কথা প্রসঙ্গে বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, 'অনেক মানুষই অভিযোগ তুলতে পারে। কিন্তু তা কতটুকু সত্যি, তা আপনাকে বিচার করতে হবে। এর আগে কারোর কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়'। তাঁর বক্তব্য, 'সেনাশাসকেরা বাংলাদেশে শাসন করেছেন। তাঁরা রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। তাঁরা কখনও মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাননি। ক্ষমতায় থাকতে সেনাবাহিনী, প্রশাসন সবকিছুই ব্যবহার করেছেন তাঁরা'।