মাদ্রাসায় কি বুলডোজার চলবে যোগী সরকারের ঘোষণা শুনেই আশঙ্কার মেঘ সংখ্যালঘুদের মধ্যে

মাদ্রাসায় কি বুলডোজার চলবে যোগী সরকারের ঘোষণা শুনেই আশঙ্কার মেঘ সংখ্যালঘুদের মধ্যে

ত্তরপ্রদেশের বেসরকারি মাদ্রাসাগুলিতে ঘুরে ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাদের আশঙ্কা, এ বার হয়তো রাজ্যের বেশ কিছু বেসরকারি মাদ্রাসাকে 'বেআইনি ঘোষণা করে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে' দেওয়া হতে পারে। রাজ্য সরকারের তরফে যদিও বলা হয়েছে, বেসরকারি মাদ্রাসাগুলির মানোন্নয়নের জন্যই এই পদক্ষেপ করছে সরকার।

এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা ঠিক নয়।

বেসরকারি মাদ্রাসাগুলিতে সমীক্ষা চালানোর জন্য একটি দল গঠন করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। দলে থাকবেন এক জন ডেপুটি কমিশনার, এক জন জেলা শিক্ষা আধিকারিক এবং জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ড। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সমীক্ষা শেষ করবে দলটি। ২৫ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্য সরকারের হাতে সমীক্ষার রিপোর্ট তুলে দেবেন জেলাশাসকরা। এ নিয়েই শুরু বিতর্ক।

ইসলামের দেওবন্দি ভাবধারায় দীক্ষিতদের সংগঠন জমিয়ত উলেমা-এ-হিন্দের সদস্যরা ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে একটি বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সংগঠনের সভাপতি মৌলানা আরশাদ মাদানি বলেন, ''বেসরকারি মাদ্রাসাগুলিতে রাজ্য সরকার সমীক্ষা চালাতে চাইলে কারও কোনও আপত্তি নেই। তবে দেখতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরকার যাতে কোনও মতেই হস্তক্ষেপ না করে।'' সংগঠনের একটি সূত্র জানিয়েছেন, তাদের তরফে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে প্রতিবাদ করা হবে। সে জন্য কমিটি গড়া হচ্ছে।

এর আগে এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এবং বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতীও এই নিয়ে যোগী সরকারকে এক হাত নিয়েছেন। এই পদক্ষেপকে 'ক্ষুদ্র এনআরসি' বলে কটাক্ষ করেছেন ওয়াইসি। মায়াবতীর অভিযোগ, এ ভাবে যোগী সরকার বেসরকারি মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে। মুসলিমদের 'ভয় দেখানোর' চেষ্টা করছে।

উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু দফতরের প্রতিমন্ত্রী দানিশ আজাদ আনসারি সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়েছেন, কোনও বেসরকারি মাদ্রাসাই গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে না। পিটিআইকে তিনি বলেন, ''যাঁরা ক্রমাগত আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, তাঁরা আগে বলুন, গত পাঁচ বছরে এই সরকারের আমলে কি একটি মাদ্রাসাও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে? এ সব আশঙ্কার কোনও ভিত্তি নেই।''

যোগী সরকারের মন্ত্রিসভায় এক মাত্র সংখ্যালঘু মন্ত্রী দানিশের কথায়, ''মাদ্রাসাগুলির বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্যই এই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। আসল উদ্দেশ্য সেগুলির মানোন্নয়ন।'' সংখ্যালঘুদের জন্য রাজ্য সরকারের যে সব উন্নয়নমূলক প্রকল্প রয়েছে, সমীক্ষার সময় সেগুলিও তুলে ধরা হবে। ওয়াইসির বিরুদ্ধে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। ওয়াইসির মন্তব্যকে এক হাত নিয়েছেন লখনউয়ের কাজি মৌলানা খালিদ রশিদ ফারাঙ্গি মাহালি। বলেছেন, সব বিষয় নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।