NEET, JEE স্থগিত রাখার অনুরোধ, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতার

সময় বাংলা# জয়েন্ট, নিটের (NEET) প্রবেশিকা পরীক্ষা স্থগিত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফের চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ নিট, জয়েন্ট স্থগিত রাখতে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিলের জন্য আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
গতকাল, সোমবারই পরীক্ষা স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ রাজ্যকে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি এদিন চিঠিতে জানায়, ১ সেপ্টেম্বর থেকেই পরীক্ষা হবে ৷ মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে জানান, ‘‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি জয়েন্ট পয়লা সেপ্টেম্বর কন্ডাক্ট করতে বলছে। আমি আগেই পরীক্ষা পিছতে বলেছিলাম।’’ সুপ্রিম কোর্টেরও এই নিয়ে রায় উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ চিঠিতে লেখেন, ‘‘এই অবস্থায় পরীক্ষা হলে পড়ুয়াদের বিপদ ৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই পরীক্ষা নিচ্ছে কেন্দ্র ৷ নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করুক সুপ্রিম কোর্ট ৷ অবস্থা স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হোক ৷
সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্র পেয়ে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা বা নিট এবং সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা বা JEE (MAIN) পরীক্ষা নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এবার এই দুটি প্রবেশিকা পরীক্ষা পিছনোর আর্জিই কেন্দ্রের কাছে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে পরপর দুটি ট্যুইট করেন তিনি। তবে শুধু ট্যুইটই নয়, পাঠিয়েছিলেন চিঠিও ৷
West Bengal CM Mamata Banerjee writes to PM Narendra Modi, asking the Central govt to file a review petition in the Supreme Court against its order to hold NEET and JEE examinations, 'so that students are free from mental agony and mental disaster'. pic.twitter.com/7jW1KfYD3o
— ANI (@ANI) August 25, 2020
মুখ্যমন্ত্রী সোমবার সকালে ট্যুইট করেন, "প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেষ ভিডিও কনফারেন্সে ইউজিসি-র তরফে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে পরীক্ষা নেওয়া নিয়ে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল তা নিয়ে আমি বলেছিলাম, পরীক্ষা ছাত্র-ছাত্রীদের বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। এখন কেন্দ্রের শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে NEET, JEE পরীক্ষা সেপ্টেম্বরে নেওয়া হবে। আমি আবার কেন্দ্রের কাছে আর্জি রাখব, ছাত্র-ছাত্রীদের এই পরীক্ষা নিয়ে কতটা ঝুঁকি রয়েছে তা বিশ্লেষণ করুন এবং পরীক্ষা স্থগিত রাখুন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত। এটা আমাদের কর্তব্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সুস্থ পরিবেশ দেওয়া।"
ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি গত জুলাই মাসে এই দুই প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন কয়েক জন পরীক্ষার্থীর অভিভাবক। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এই দুই প্রবেশিকা পরীক্ষা দিলে ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে এই বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়। কিন্তু সেই মামলার রায় পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে। গত ২১ অগাস্ট ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির তরফে তারপর বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির তরফে জানানো হয়, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা বা JEE (MAIN) নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ছাত্র-ছাত্রীদের অ্যাডমিট কার্ড ইস্যু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ৮৫৮২৭৩ জন পরীক্ষার্থী এবছর জেইই মেইন পরীক্ষা দেবে। অন্যদিকে সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা বা NEET পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১,৫৯,৭৪৩৩। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির তরফে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরামর্শ মতো পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত সকল জাতি মেনে চলা হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী দেওয়া হচ্ছে। খুব শীঘ্রই সর্বভারতীয় মেডিক্যালে প্রবেশিকা পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড ইস্যু করা হবে বলেও ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এ রাজ্যের বেশকিছু ছাত্রসংগঠন পরীক্ষা পিছনোর দাবি নিয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যদিকে ফাইনাল সেমিস্টার-এর পরীক্ষার ভবিষ্যৎ এখন নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ওপর। ইউজিসি-র পরীক্ষা নেওয়া নিয়ে যে গাইডলাইন জারি করা হয়েছে, তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করা হয়েছে৷ সেই মামলার রায় খুব শীঘ্রই দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট।