বেঁচে থাকার ইচ্ছা ফুরিয়েছে, স্বেচ্ছামৃত্যু চান নদীয়ার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক

বেঁচে থাকার ইচ্ছা ফুরিয়েছে, স্বেচ্ছামৃত্যু চান নদীয়ার  অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক

সময় বাংলা#  গত ৪ মাস ধরে নদিয়ার নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এক কোণে দিন কাটছে ২০১৩ সালের মে মাসে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ঘনশ্যাম সাহা রায়ের । তাই বেঁচে থাকার ইচ্ছা ফুরিয়েছে তার। অন্তত এমনটাই মনে করছেন নবদ্বীপ প্রাথমিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ঘনশ্যাম সাহা রায়।  নবদ্বীপ পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের হরিজনপল্লি উদ্বাস্তু কলোনির জিএসএফ প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ১৯৯৭ সালে ওই স্কুলে চাকরি থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। ওই অবস্থাতেই ২০১৩ সালের মে মাসে অবসর নিতে হয় তাঁকে।

নবদ্বীপ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাকাটোল এলাকায় তাঁর নিজের বাড়ি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর বাড়িতে ঠাঁই হয় না। প্রচণ্ড আর্থিক কষ্টে দীর্ঘদিন ধরেই ভুগতে হচ্ছে। নিজের খাওয়াদাওয়া ও চিকিৎসার খরচ চালানোর সামর্থ্য পর্যন্ত নেই। অবসর গ্রহণের পর কেটে গিয়েছে সাতটি বছর। নিজের প্রাপ্য পেনশন, পিএফ, গ্র্যাচুইটির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার আবেদন করেও তা মেলেনি। চরম আর্থিক কষ্টের মধ্যে তাকে কাটাতে হয়েছে বহুদিন। চরম হতাশা আর অবসাদে হারিয়েছেন নিজের বেঁচে থাকার মনের জোর। তাঁর কথায়, ”আমার আর এখন বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। আমি স্বেচ্ছামৃত্যু চাই।” বর্তমানে তাঁর নিজের দাঁড়ানোর পর্যন্ত ক্ষমতা নেই। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের জানাচ্ছেন, চার মাস ধরে হাসপাতালে কর্মরত একজন ওয়ার্ড মাস্টার-সহ নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে দু’বেলা খাবার দিয়েছেন।

পরিবারের কেউ তাঁর খবর পর্যন্ত নিতে আসেনি এতদিন। ঘনশ্যামবাবু জানিয়েছেন, ”আমার প্রাপ্য পেনশন,বকেয়া পিএফ, গ্র্যাচুইটির জন্য নবদ্বীপ আরবান সার্কেলের সাব-ইন্সপেক্টরের কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত মেলেনি কিছুই। বিষয়টি জানিয়েছি জেলা প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল, নবদ্বীপ আরবান সার্কেলের সাব ইন্সপেক্টর, জেলা স্কুল পরিদর্শক ও অন্যান্য অফিসে। এত কিছু করেও এত বছরে আমার পেনশন ,বকেয়া পিএফ, গ্র্যাচুয়িটি কিছুই মেলেনি। জীবনের প্রতি আমি চরম হতাশ। আর আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। এইভাবে বেঁচে থাকার থেকে মৃত্যু শ্রেয়। আমি স্বেচ্ছামৃত্যু চাই।”যদিও ঘটনাটি শোনার পর দাদাকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন ঘনশ্যামবাবুর ছোট বোন অনিতা রায় সাহা। তিনি অসুস্থ দাদাকে চিকিৎসার জন্য ওই হাসপাতালে ভরতি করায় উদ্যোগী হয়েছেন।