ভবানীপুরের ব্যবসায়ী খুন নিমতায়! নিহতের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী

ভবানীপুরের ব্যবসায়ী খুন নিমতায়! নিহতের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী

তাঁর বিধানসভা এলাকার ব্যবসায়ীর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড! শিলিগুড়ি থেকে ফিরেই ভবানীপুরের নিহত ব্যবসায়ী ভব্য লাখানির বাড়ি পৌঁছলেন মমতা৷ সঙ্গে ছিলেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলও৷ দীর্ঘক্ষণ নিহতের পরিবার পরিজনের সঙ্গে কথা বললেন মমতা৷ পুলিশ কমিশনার জানালেন, হত্যাকাণ্ডের তদন্ত বালিগঞ্জ থানা নয়, করবে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা৷

গত মঙ্গলবার হঠাৎই রাত আড়াইটে নাগাদ পাশের বাড়ির ছাদে প্রতিবেশীকে তার জলের ট্যাঙ্কের নীচে দেহ লুকিয়ে ইট গাঁথতে দেখেন এক ব্যক্তি৷ সন্দেহ হওয়ায় তৎক্ষণাৎই খবর দেন নিমতা থানায়৷

জানা গিয়েছে, এমন একটি খুনের খবর পেয়েই মিছিল বাতিল করে তিনি নিজের কেন্দ্রে ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পৌঁছন নিহতের বাড়িতে৷ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘শিলিগুড়িতে একটা স্যাড নিউজ় পেয়েছিলাম। তাই মিছিল ক্যান্সেল করে চলে এসেছি। সিধেসাধা ব্যবসায়ী ছিল। ওরা পুলিশের কাছে মিসিং ডায়েরি করে। পুলিশ কিছু ক্ষণের মধ্যে গ্রেফতার করেছে। আমি মনে করি এরা ক্রিমিনাল নয়। ক্রিমিনালের চেয়েও বড় ক্রিমিনাল।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘‘নিমতার ঘটনা পরিকল্পিত খুন। এদের ক্রিমানাল ব্রেন। পুলিশের রিপোর্ট থেকে দেখলাম।’’ পাশাপাশি, গোটা ঘটনার তদন্তভার লালবাজারের হোমিসাইড শাখার হাতে দেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার৷ ইতিমধ্যেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহত ব্যবসায়ীর বিজনেস পার্টনার সহ ২জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷

তের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীদের বক্তব্য অনুযায়ী, নিমতা থেকে ধৃত অনির্বাণ মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ ছিল। বেসরকারি একটি ওষুধের কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর হিসাবে কাজ করত সে। তাঁদের দাবি, ভব্য লাখানির থেকে বেশ কিছুদিন আগে বড় রকমের টাকা নিয়েছিল অনির্বাণ। তাই টাকার জন্য ভব্য লাখানি চাপ দিচ্ছিল৷ পরশুদিন টাকা দেওয়ার জন্যেই অনির্বাণ তার বিরাটির নিমতার বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিল ভব্য লাখানিকে। তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল ওই ব্যক্তি।

পরিবারের তরফ থেকে নিখোঁজ অভিযোগ পেয়ে ভবানীপুর থানা তদন্তে নেমে মোবাইলের কল লোকেশন দেখে অনির্বাণকে গ্রেফতার করে। আর তারপরেই জিজ্ঞাসা বাদে খুনের কথা স্বীকার করে নেন অভিযুক্ত। এরপরই জানা যায়, ওই ব্যক্তিকে খুন করে জলের ট্যাঙ্কের নীচে পুঁতে পাঁচিল তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও ঘটনার পিছনে শুধু টাকা আদায়ের সমস্যা, নাকি ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে, তা এখনই স্পষ্ট নয়৷ গোটা ঘটনাই তদন্ত সাপেক্ষ বলে জানিয়েছে পুলিশ৷

এদিকে দেহ উদ্ধারের পরে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়ার এমন কাণ্ড দেখে রীতিমতো আতঙ্কিত সকলে। প্রতিবেশীরা জানান আর দশজন সাধারণ ছেলের মতই ছিল সে। অনির্বাণ সহ তার পরিবার এলাকায় কারোর সঙ্গে বেশি মিশত না। এমনকি ২৬-নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শুক্লা চ্যাটার্জিও সেইভাবে চেনেন না অনির্বাণকে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘অনির্বাণ ভাড়া থাকত ওই বাড়িতে৷ এটুকুই জানি। তবে এই ঘটনা আরও একবার চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিল, যারা এইভাবে কিছু না জেনে ভাড়াটিয়াদের বাড়িতে থাকতে দেন তারা সতর্ক হোন। আগামিদিনে ভাড়া দেওয়ার আগে খোঁজখবর নিয়ে তবেই যেন বাড়িতে ভাড়াটিয়া থাকার অনুমতি দেন।’’